সাখাওয়াতুল্লাহ, প্রথম বর্ষ
২রা জুন ২০১৩ খ্রি.
পরীক্ষা চলছে। সবাই নিজ নিজ লেখা-পড়ায় ব্যস্ত। আমিও পড়ছিলাম। পড়ার ফাঁকে মনে হলো ‘আসলে ছাত্র জীবন বড় সুখের জীবন’। কারণ এ জীবনে সাংসারিক কোন ঝামেলা নেই। শুধু পড়া শোনা। “কিন্তু সমস্যা একটাই। সেটা হলো, পরীক্ষা। কারণ যদি পরীক্ষা না থাকতো তাহলে ছাত্র জীবনটা আরো সুখময় হয়ে উঠতো”। এটা হলো সুবিধাবাদী ছাত্র সমাজের শ্লোগান। প্রকৃত শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষা হলো নিজেকে ফুটিয়ে তোলার এক চমৎকার মাধ্যম। তাই তাদের জন্য পরীক্ষাটা বিরক্তিকর নয়; বরং সুখ ও আনন্দের মহা নিয়ামত।
হঠাৎ একটি কন্ঠে আমার ভাবনায়ছেদ পড়লো। মুদীর সাহেব সবাইকে বসতে বলছেন। আমরা সবাই গোছগাছ হয়ে তড়িঘড়ি করে বসে পড়লাম।কিছুক্ষণ পর মুদীর সাহেব অন্যান্য হুযূরসহ তাশরীফ রাখলেন। মুদীর সাহেবকে বিমর্ষ দেখাচ্ছিল।চেহারা দেখে বুঝা যাচ্ছিল কিছু একটা হয়েছে। তারপর তিনি ভারাক্রান্ত কন্ঠে বললেন, দেখ! আমাদের পর্যন্ত দ্বীন পর্যায়ক্রমে যে সমস্ত আকাবীরদের ত্যাগ ও কষ্টের দৌলতেপৌঁছেছে, সে সমস্ত আকাবীরদের অনেকেই পরলোক গমন করেছেন। কিছুক্ষণ পূর্বেখবর এসেছে, চলে যাওয়া সে সমস্ত আকাবীরদের কাতারে শামীল হয়েছেন বিশ্বনন্দিত আলেমে দ্বীন পীরে কামেল হযরত মাওলানা হাকীম আখতার সাহেব রহ.। এ খবর শুনে সবাই বেদনারস্বরে বলে উঠলো- انا لله وانا اليه راجعون
কিছুক্ষণ পর কিছু সূরাও দুরূদ পাঠ করতঃ সবাই মাওলার দরবারে হাত উঠালাম এবং কেঁদে কেঁদে দু‘আ করলাম, হে আল্লাহ! আপনি হাকীম আখতার সাহেবসহ সমস্ত আকাবীরদেরকে মাফ করে তাদেরকে জান্নাতুলফিরদাউসের সুমহান মাকাম দান করুন এবং তাদের রেখে যাওয়া মিশনগুলোকে বাস্তবায়ন করা এবংতাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করার তাওফীক দান করুন। আমীন। এভাবে দীর্ঘ ১০ থেকে ১৫ মিনিট দু‘আর পর আমাদের দু‘আ অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।