হাদীসের ভাষায় মুসলিম উম্মাহর অধঃপতনের কয়েকটি মৌলিক কারণ

মুফতী মাহমূদুল আমীন


মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানুষকে অতি সম্মানিত করে সৃষ্টি করেছেন। স্বয়ং আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন, অবশ্যই আমি বনী আদমকে সম্মানিত করেছি। (সূরা বনী ইসরাঈল; আয়াত ৭০) আল্লাহ তা‘আলা মহা জগতের সকল বস্তুনিচয়কে মানুষের উপকারার্থে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, তিনি পৃথিবীর সবকিছু তোমাদের কল্যাণে সৃষ্টি করেছেন। (সূরা বাকারা; আয়াত ২৯)। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলার আদরের সৃষ্ট এ মানব জাতি আজ চরম পেরেশানী আর অস্থিরতার মধ্যে দিনাতিপাত করছে। নানাবিধ রোগ-ব্যাধি আর ভয়াবহ দুর্যোগের কষাঘাতে জর্জরিত হচ্ছে। বিশেষত যারা মুসলমান, যারা আল্লাহর মনোনীত ধর্ম ইসলামের অনুসারী, যাদেরকে আল্লাহ তাআলা সর্বোত্তম বলে ঘোষণা করেছেন তাদের বিপদই যেন সবচে‘ বেশী। তারা আজ সকল জালিমের লোমহর্ষক জুলুমের শিকার। মুসলমানদের উপর চলছে আজ ইহুদী, নাসারা, বৌদ্ধ, মুশরিক ও কমিউনিষ্ট সহ সকল কুফুরী শক্তির ভয়াবহ আগ্রাসন। আজ জ্বলছে সিরিয়া- ইরাক, পুড়ছে কাশ্মীর-ফিলিস্তীন, কাঁদছে আরাকান। মুসলিম রক্তের শোণীত ¯্রােতে সবুজ পৃৃথিবী রক্ত লাল হয়ে যাচ্ছে। চারদিক থেকে ভেসে আসছে স্বজন ও সম্ভ্রম হারা মা বোনদের করুণ আহাজারী। কিন্তু কেন? কেন আমাদের আজকের এই করুণ পরিণতি? আমাদের প্রথম কেবলা বাইতুল মুকাদ্দাস কেন আজ অভিশপ্ত ইহুদীদের হাতে বন্দি? এর জন্য কুফরী শক্তি যেমন দায়ী তেমন দায়ী আমরাও। কুরআন-হাদীসের বিধানাবলী পালনে আমাদের চরম উদাসিনতা এ মহা দুর্যোগের অন্যতম কারণ। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আমি তোমাদের মাঝে দুটি জিনিস রেখে যাচ্ছি যতদিন তোমরা এ দু’টিকে আঁকড়ে ধরবে ততদিন তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না। একটি হলো কিতাবুল্লাহ (কুরআনে কারীম), অন্যটি হলো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাত। (মুআত্তা ইমাম মালেক; হাদীস ১৫৯৪) কুরআন-সুন্নাহ মযবূত ভাবে আঁকড়ে না ধরার কারণে মানুষের মাঝে ভ্রষ্টতা এসেছে। আর পথভ্রষ্টতার কারণে তারা দ্রুত বেগে ছুটে চলছে পাপ-পঙ্কিলতার অভিশপ্ত পথে। ফলে তাদের দিকে ধেঁয়ে আসছে আসমানী গযব ও ভয়ংকর বিপদাপদ।

প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্তমান জুলুম-নির্যাতন আর বিপদাপদ সম্পর্কে অনেক আগেই উম্মাহকে সতর্ক করেছেন। তাঁদেরকে আল্লাহর বিধান মান্য করে তাঁর সাহায্যের ছায়াতলে থাকতে বলেছেন। এমন অনেক গুনাহকে চিহ্নিত করে দিয়েছেন যেগুলোর কারণে জুলুম-নির্যাতন আর বিপদ-আপদের দ্বার খুলে যায়। নিম্নে এমন কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করা হলো যেগুলোর দ্বারা বর্তমান অবস্থার কারণ এবং আমাদের করণীয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট নির্দেশনা পাওয়া যাবে, ইনশা-আল্লাহ।

হাদীস : ১

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের দিকে এগিয়ে আসলেন। অতঃপর বললেন, হে মুহাজির সকল! তোমরা পাঁচটি বিষয়ে পরীক্ষার সম্মুখীন হবে। তবে আমি আল্লাহর কাছে পরিত্রাণ চাচ্ছি যেন তোমরা তাতে পতিত না হও। (সে পাঁচটি বিষয় হচ্ছে:)

(১) যখন কোন জাতির মাঝে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে, তখন সেখানে মহামারী দেখা দিবে। তাছাড়া এমন সব ব্যাধি ছড়িয়ে পড়বে, যা পূর্বেকার লোকদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি।

(২) যখন কোন জাতি ওজন ও পরিমাপে কারচুপি করবে, তখন তাদের উপর নেমে আসবে দুর্ভিক্ষ, কঠিন বিপদ-আপদ; জালেম শাসক গোষ্ঠী তাদের উপর নিপীড়ন করবে।

(৩) যখন কোন জাতি তাদের ধন-সম্পদের যাকাত বিধান পরিত্যাগ করে, তখন আকাশের বৃষ্টি বন্ধ করে দেয়া হয়। যদি ভূপৃষ্ঠে চতুষ্পদ জন্তু না থাকতো, তাহলে আর বৃষ্টি হতো না।

(৪) যখন কোন জাতি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, তখন আল্লাহ তাদের উপর এমন এক শত্রুকে ক্ষমতাসীন করে দেন, যে তাদের বংশোদ্ভুত নয় এবং সে তাদের কাছে যা আছে, তা কেড়ে নিবে।

(৫) আর যখন তোমাদের শাসকবর্গ আল্লাহর কিতাব অনুসারে মীমাংসা করবে না এবং আল্লাহর নাযিলকৃত বিধানকে গ্রহণ করবে না তখন আল্লাহ তাদের পরস্পরের মধ্যে যুদ্ধ-বিগ্রহ সৃষ্টি করে দিবেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ; হাদীস ৪০১৯, মুস্তাদরাকে হাকেম; হাদীস ৮৬২৩, মুসনাদে বায্যার; হাদীস ৬১৭৫) সনদটির সবগুলো বর্ণনাকারী নির্ভরযোগ্য। (মাজমাউয যাওয়াইদ ৫/৩৮২; শামেলা সংস্করণ)

হাদীস : ২

হযরত যয়নাব বিনতে জাহশ রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

একদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থায় তার কাছে আসলেন এবং বললেন, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। আরবের জন্য মহাবিপদ অপেক্ষা করছে সেই দুর্যোগের কারণে, যা অতি নিকটে। আজ ইয়াজুজ-মাজুজের প্রাচীর এই পরিমাণ খুলে গেছে। এ বলে তিনি স্বীয় বৃদ্ধাঙ্গুলী ও তদসংশ্লিষ্ট আঙ্গুলদ্বয় বৃত্তাকার করে দেখালেন। তখন হযরত যয়নাব রাযি. জিজ্ঞেস করলেন, আল্লাহর রাসূল! আমাদের মধ্যে নেককার লোক থাকা সত্ত্বেও কি আমরা ধ্বংস হয়ে যাবো? তিনি বললেন, হ্যাঁ, যখন পাপাচার বেশি পরিমাণে হবে। (সহীহ বুখারী; হাদীস ৩৩৪৬, সহীহ মুসলিম; হাদীস ২৮৮০)

হাদীস : ৩

হযরত সাওবান রাযি. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

খাদ্য গ্রহণকারীরা যেভাবে খাবারের পাত্রের চতুর্দিকে একত্র হয়, অচিরেই বিজাতিরা তোমাদের বিরুদ্ধে সেভাবেই একত্রিত হবে। এক ব্যক্তি বললো, সেদিন আমাদের সংখ্যা কম হওয়ার কারণে কি এরূপ হবে? তিনি বললেন, তোমরা বরং সেদিন সংখ্যাগরিষ্ঠ হবে; কিন্তু তোমরা হবে প্লাবনের ¯্রােতে ভেসে যাওয়া খড়কুটার মতো। আর আল্লাহ তোমাদের শত্রুদের অন্তর হতে তোমাদের ভয় দূরভিত করে দিবেন এবং তোমাদের অন্তরে ‘আল-ওয়াহন’ ভরে দিবেন। এক সাহাবী জিজ্ঞাসা করলো, হে আল্লাহর রাসূল! ‘আল-ওয়াহন’ কি? তিনি বললেন, দুনিয়ার ভালোবাসা ও মৃত্যুর প্রতি অনাগ্রহ। অন্য বর্ণনায় এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ওয়াহন হলো, দুনিয়ার প্রতি তোমাদের ভালোবাসা ও কিতালের প্রতি তোমাদের বিতৃষ্ণা। (সুনানে আবূ দাউদ; হাদীস ৪২৯৭, মুসনাদে আহমাদ; হাদীস ২২৪৫০, ৮৬৯৮) শাইখ শু‘আইব আরনাউত রহ. বলেন, মুসনাদে আহমাদের বর্ণনাসূত্রটি হাসান। (মুসনাদে আহমাদ ৫/২৭৮; শামেলা সংস্করণ)

হাদীস : ৪

হযরত আবূ হুরাইরা রাযি. বলেন,

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদের সাথে কথা বলছিলেন। এমন সময় এক বেদুঈন এসে জিজ্ঞেস করলো, কিয়ামত কখন সংঘটিত হবে? উত্তরে তিনি বললেন, আমানত যখন নষ্ট করা হবে তখন কিয়ামতের অপেক্ষা করো। লোকটি জিজ্ঞেস করলো, তা কীভাবে নষ্ট করা হবে? তিনি বললেন, কাজের দায়িত্ব যখন অনুপযুক্ত লোকদের হাতে দেয়া হবে, তখন কিয়ামতের অপেক্ষা করো। (সহীহ বুখারী; হাদীস ৫৯)

হাদীস : ৫

হযরত আনাস রাযি. বলেন,

আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের আলামতসমূহের মধ্যে রয়েছে: ইলম উঠে যাবে, মূর্খতা বৃদ্ধি পাবে, ব্যভিচার বেড়ে যাবে, মদ্যপান বৃদ্ধি পাবে, পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে এবং নারীর সংখ্যা বেশি হবে। এমনকি পঞ্চাশজন নারীর পরিচালক হবে একজন পুরুষ। (সহীহ বুখারী; হাদীস ৫২৩১, সহীহ মুসলিম; হাদীস ২৬৭১)

হাদীস : ৬

হযরত হুযাইফা রাযি. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

ঐ সত্তার কসম! যার কুদরতী হাতে আমার প্রাণ, তোমরা অবশ্যই সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করতে থাকো। নতুবা হয়তো আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের উপর আযাব পাঠাবেন তখন তোমরা দু‘আ করবে কিন্তু তোমাদের দু‘আ কবূল করা হবে না। (সুনানে তিরমিযী; হাদীস ২১৬৯)

হাদীস : ৭

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযি. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

যখন তোমরা বাইয়ে ঈনা (এক প্রকার সুদী কারবার) করবে এবং গরুর লেজ ধারণ করবে, চাষাবাদ নিয়ে সন্তুষ্ট থাকবে (অর্থাৎ দুনিয়াকে আখেরাতের উপর প্রাধান্য দিবে) এবং জিহাদ বর্জন করবে, তখন তোমাদের উপর লাঞ্ছনা, অপমান চাপিয়ে দেয়া হবে যতক্ষণ না তোমরা দীনের দিকে প্রত্যাবর্তন করবে। (সুনানে আবূ দাউদ; হাদীস ৩৪৬৪)

হাদীস : ৮

হযরত আবূ হুরাইরা রাযি. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন,

কিয়ামত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ না আমার উম্মত অতীত প্রজন্মের আচার-অভ্যাসকে বিঘতে বিঘতে, হাতে হাতে গ্রহণ না করবে। জিজ্ঞাসা করা হলো, আল্লাহর রাসূল! অতীত প্রজন্ম বলতে কি পারস্য ও রোম অধিবাসী উদ্দেশ্য? তিনি বললেন, এরা ছাড়া আর কারা? এরাই তো। (সহীহ বুখারী; হাদীস ৭৩১৯)

হাদীস : ৯

হযরত হুযাইফা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

একদিন আমরা উমর রাযি. এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ফিতনা সম্পর্কে আলোচনা করতে শুনেছো? উপস্থিত একদল লোক বললেন, আমরা শুনেছি। উমর রাযি. বললেন, তোমরা হয়তো পরিবার ও প্রতিবেশীর ফিতনার কথা মনে করেছো। তারা বললো, হ্যাঁ, তাই তো। তিনি বললেন, এগুলো তো এমন ফিতনা, নামায রোযা ও সদকার মাধ্যমে যার কাফ্ফারা হয়ে যায়; বরং তোমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সেই ফিতনা বলতে শুনেছো কি না, যা সমুদ্র তরঙ্গের মতো ধেয়ে আসবে। হুযাইফা রাযি. বলেন, প্রশ্ন শুনে সবাই নীরব হয়ে গেলো। আমি বললাম, আমি (শুনেছি)। উমর রাযি. বললেন, তুমি শুনেছো! মা-শা-আল্লাহ। হুযাইফা রাযি. বললেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, চাটাই বুননের মতো এক এক করে ফিতনা মানুষের অন্তরে আসতে থাকবে। যে অন্তরে তা গেঁথে যাবে, তাতে একটি করে কালো দাগ পড়ে যাবে। আর যে অন্তর তা প্রত্যাখ্যান করবে তাতে একটি করে শুভ্রোজ্জ্বল চিহ্ন পড়বে। এমনি করে দু’টি অন্তর দু’ধরনের হয়ে যাবে। একটি হবে শ্বেত পাথরের মতো। মহাকাশ ও পৃথিবী যতদিন থাকবে ততোদিন কোন ফিতনা তার ক্ষতি করতে পারবে না। আর অপরটি হবে উল্টানো কালো কলসির মতো। প্রবৃত্তির মাধ্যমে তার মাঝে যা সিঞ্চিত হয়েছে তা ছাড়া ভালোমন্দ বলতে সে কিছুই চেনে না। হুযাইফা রাযি. বললেন, উমর রাযি. কে আমি আরো বললাম, আপনি এবং সে ফিতনার মধ্যে একটি তালাবদ্ধ কপাট রয়েছে, অচিরেই সেটি ভেঙ্গে ফেলা হবে। উমর রাযি. বললেন, সর্বনাশ! তা ভেঙ্গে ফেলা হবে? যদি তা না ভেঙ্গে উন্মুক্ত করা হতো, তাহলে হয়তো পুনরায় তা তালাবদ্ধ করা যেতো। হুযাইফা রাযি. উত্তরে বললেন, না, ভেঙ্গেই ফেলা হবে। হুযাইফা রাযি. বলেন, আমি উমর রাযি. কে এ কথাও শুনিয়েছি, সে দরজাটি হলো, একজন মানুষ; সে নিহত হবে কিংবা স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করবে। এটি কোন গল্প নয়; বরং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস। (সহীহ মুসলিম; হাদীস ১৪৪)

হাদীস : ১০

হযরত আবূ হুরাইরা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

তোমরা নেক আমলের দিকে তাড়াতাড়ি অগ্রসর হও ঘুটঘুটে অন্ধকার রাতের অংশ সদৃশ ফিতনায় পতিত হওয়ার আগেই। যখন কোন ব্যক্তি সকাল করবে মুমিন হয়ে আর সন্ধ্যা করবে কুফরী অবস্থায় এবং সন্ধ্যা করবে মুমিন অবস্থায় আর সকাল করবে কাফের হয়ে। সে পার্থিব সামান্য সম্পদের বিনিময়ে নিজের দীন ও ঈমানকে বিক্রয় করে দিবে। (সহীহ মুসলিম; হাদীস ১১৮) প্রিয় পাঠক! আমরা যদি আজকের বিশ্ব পরিস্থিতির দিকে দৃষ্টিপাত করি তাহলে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই হাদীসগুলোর সত্যতা দিবালোকের ন্যায় সুষ্পষ্ট হয়ে যায়। এ হাদীসগুলোতে বিপদাপদ ও অধঃপতনের যে সকল কারণ চিহ্নত করা হয়েছে সেগুলো বর্তমানে ব্যাপকভাবে বিদ্যমান। ফলে এগুলোর ভয়াবহ পরিণতিও আজ সর্বত্র দৃশ্যমান। তাই আসুন আমরা বর্তমান অধঃপতন থেকে উত্তরণ ও জুলুম-নির্যাতনের অবসানের জন্য এখনই করণীয়গুলো পালন এবং গুনাহগুলো বর্জণ করতে সচেষ্ট হই। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে তাওফীক দান করেন। আমীন।

পোস্টটি লাইক ও শেয়ার করুন।

একটি মন্তব্য লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *