মুহাম্মাদ ইরফান জিয়া
জামি‘আ রাহমানিয়ার মুহতামিম মাওলানা হিফযুর রহমান সাহেব এবং প্রধান মুফতী, মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা.বা.। দু’জনে একসাথে গেছেন হারদুয়ীতে। সাথে বাংলাদেশের আরো কয়েকজন আলেমে দ্বীন।
সেখানে পৌঁছার পর হারদূয়ী হযরত তাঁদের বললেন, এখানে থাকার ব্যাপারটা আপনাদের ইখতিয়ারে রয়েছে। ইচ্ছে করলে মেহমানখানায় থাকতে পারেন আবার চাইলে কুতুবখানাতেও থাকতে পারেন।
তাঁরা নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করে কুতুবখানায় থাকাকে ভালো মনে করে সেখানে ঢুকে পড়লেন। ভাবলেন, যাক থাকার ব্যাপারটা তাহলে নিষ্পত্তি হয়ে গেলো। এবার অন্যান্য ফিকির করা যায়।
কিন্তু না, ব্যাপারটা শেষ হয়নি। হযরতের কাছে সংবাদ গেলো ঢাকার মেহমানরা কুতুবখানায় ঢুকেছেন। তিনি তাঁদেরকে ডাকালেন। নিজেদের খেয়াল খুশি মতো কুতুবখানায় ঢুকে পড়ার বিষয়ে কৈফিয়ত চাইলেন। হযরতের কথায় মুফতী সাহেব এবং হিফযুর রহমান সাহেব একেবারে জড়োসড়ো হয়ে গেলেন। বুঝতেই পারছেন না- কী ভুল হয়ে গেছে। হযরত নিজেই তো কুতুবখানা ও মেহমানখানার যে কোন একটায় থাকার ইখতিয়ার আমাদের দিয়েছিলেন। এখন আবার হযরত কৈফিয়ত চাইছেন! মুফতী সাহেব এবং হিফযুর রহমান সাহেব খুবই আশ্চর্য হলেন। কিন্তু কিছুই না বলে হযরতের সামনে আদবের সাথে বসে রইলেন।
হারদুয়ী হযরত বুঝতে পারলেন। তাই বিষয়টা তাদের সামনে স্পষ্ট করলেন। বললেন, ‘আপনাদেরকে আমি দুই কক্ষের যেকোনো একটি গ্রহণ করার ইখতিয়ার দিয়েছিলাম, ঠিক আছে। কিন্তু উচিৎ ছিলো- ইখতিয়ার পাওয়ার পর আপনারা নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করবেন। এরপর আমাকে জানাবেন যে, আমরা দুই কামরার মধ্যে এটাকে গ্রহণ করেছি। আমার অবগতির পর আপনারা মাল-সামানা নিয়ে সেখানে যাবেন। এটাই ছিলো স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তা না করে নিজেরাই একটাতে ঢুকে পড়লেন। এটা কি ঠিক হলো?’
গল্পের তোহফা:
এভাবেই হারদুয়ী হযরত তাঁর দরবারে আগত মেহমানদের প্রতিটি পদক্ষেপ লক্ষ করতেন। প্রতিটি নড়াচড়া দেখে নির্ধারণ করতেন রোগ। আর সে অনুযায়ী দিতেন রুহানী প্রেসক্রিপশন, আত্মশুদ্ধির পথনির্দেশ।*
*১৬ই ডিসেম্বর ২০১৬, মসজিদুল আবরারে দাওয়াতুল হকের মজলিস শুরুর পূর্বে নাস্তার মজলিসে মুফতী সাহেব হুজুরের মুখে শোনা।