মতিউর রহমান, দ্বিতীয় বর্ষ
৩রা মে ২০১৩ খ্রি.
সময়ের শ্রোতে বয়ে যাচ্ছে আমার জীবনের দিন-রাত। কতবার চাঁদ উদিত হল এবং কতবার অস্ত গেলো। কতবার পূর্ণিমা অমাবশ্যার পালাবদল হলো। এরই মাঝে হারিয়ে গেছে শৈশব, এখন হারাতে বসেছে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র জীবন। পড়াশোনা শুরু হয়েছিল বাবার হাত ধরে। দেখতে দেখতে তাকমীল সমাপ্ত হলো। এইতো সেদিন মা’হাদে এসে ভর্তি হলাম। তখন চারপাশে ছিল সুন্দর কাশবন। ফুলে ছিল ভরা যৌবন। কিছুদিনের মধ্যে যৌবন হারিয়ে বার্ধক্যে পতিত হলো। এক সময় নিঃশেষ হয়ে গেল। এ পৃথিবীতে কোন কিছুর স্থায়িত্ব নেই। সব সৃষ্টিকে এক সময় চলে যেতে হবে তার স্রষ্টার কাছে।
দেখতে দেখতে আমাদের বিদায় মুহূর্ত ঘনিয়ে আসছে। পূর্ণিমা রাতের আলোকিত চাঁদ হারিয়েছে তার স্নিগ্ধতা ও শুভ্রতা। সূর্য হারিয়েছে তার প্রখরতা। মরুভূমিতে শুরু হয়েছে সর্বনাশী বালু ঝড়। থেমে গেছে পর্বত বেয়ে নেমে আসা ঝর্ণার ছন্দপতন ও সাগরের উত্তাল তরঙ্গের শোঁ শোঁ কল্লোল ধ্বনি। বিদায়ের করুণ সুর বেজে চলছে। প্রিয়জনদের বিচ্ছেদের বিরহ বেদনায় মনের নীলিম আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে গেছে। অতীতের স্বর্ণালী দিনের মধুময় স্মৃতিগুলো আজ হৃদয় সৈকতে তরঙ্গের ন্যায় আছড়ে পড়ছে। স্মৃতিপটে ভেসে উঠছে মা’হাদের অতীত সময়ের মধুময় দৃশ্য। দরস, ফতোয়া লেখা ও মুতালা‘আর দৃশ্য। উস্তাদদের নূরানী চেহারা। হৃদয়গ্রাহী নসীহত। সাথী ভাইদের সৌহার্দ্যপূর্ণ ব্যবহার। আরো কত কী…
একসাথে থেকেছি, করেছি কত খেলা,
চলেছি ফিরেছি মোরা, কেটে গেছে কত বেলা।
দেখা হয় যদি কভু জীবনের তরে,
পাশ কেটে চলে যেওনা বন্ধু অবহেলা করে।
বিদায়! বিদায়!! বিদায়!!!