আমার মুসলমানিত্ব ঠিক আছে তো?

মুফতী হাফিজুর রহমান

পৃথিবীতে ধর্মের শেষ নেই। প্রতিটি ধর্মেরই আচার ও বিশ্বাস আলাদা। প্রতিটি ধর্মেরই মৌলিক কিছু বিশ্বাস থাকে। সে বিশ্বাসগুলোকে কেন্দ্র করেই ব্যক্তির সে ধর্মের হওয়া বা না হওয়াকে নির্ণয় করা হয়।

ইসলাম ধর্মেও মৌলিক কিছু নীতি-বিশ্বাস রয়েছে। যেগুলোতে বিচ্যুতি ঘটলে মুসলমানিত্ব ছুটে যায়। একজন ব্যক্তিকে মুসলিম হতে হলে তাকে অপরাপর ধর্মগুলোকে অসত্য বা রহিত বলে বিশ্বাস করতে হয়। তারা জান্নাত-বেহেশতের যোগ্য নয় এ কথা মনে প্রাণে বিশ্বাস করে নিতে হয়। নতুবা সে মুসলিম নাম ধারণ করার অধিকার পায় না।

এটি শুধু ইসলাম ধর্মের ক্ষেত্রে নয়, বরং সকল ধর্মের ক্ষেত্রেই সেধর্মের প্রতিটি আচার-বিশ্বাস পালন ও লালনকে প্রশংসনীয় দৃষ্টিতে দেখা হয়। ধর্মের কিছু অর্জন ও কিছু বর্জনকে কোনো ধর্মেই ভালো চোখে দেখা হয় না।

ইসলামের চিরন্তন মৌলিক একটি বিশ্বাস্য-নীতি হলো, অন্য ধর্মের মানুষগুলোর জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করা যাবে না। পবিত্র কুরআনে নবীদেরকেও ভিন্নধর্মালম্বীদের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করতে নিষেধ করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, আত্মীয় স্বজন হলেও মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা নবী এবং মুমিনদের জন্য সঙ্গত নয়, যখন স্পষ্ট হয়ে গেছে যে তারা নিশ্চিত জাহান্নামী। সূরা তাওবা, আয়াত ১১৩।

এমনিভাবে ইসলামের অন্যতম আরেকটি বিশ্বাস হলো, ভিন্ন ধর্মের মানুষগুলো জান্নাতে যাবে না। আল্লাহ তাআলা এ বিষয়টি পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন জায়গায় পরিষ্কার করেছেন। আল্লাহ বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক করাকে ক্ষমা করেন না। এতদ্ব্যতীত অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। সূরা নিসা, আয়াত ৪৮। অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে শরীক করবে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিবেন। তার আবাস হলো জাহান্নাম। জালেমদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই। সূরা মায়িদা, আয়াত ৭২।

সুতরাং এ নীতির আলোকে এটা পরিস্কার যে, কেউ যদি বিশ্বাস করে, অমুসলিমরাও জান্নাতবাসী হতে পারে তাহলে তার মুসলমানিত্ব থাকবে না। যখন কোনো অমুসলিমের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা হয় তখন সাধারণত এ বিশ্বাস নিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করা হয় যে এ ব্যক্তি ক্ষমা পেতে পারে এবং জান্নাতে যেতে পারে। এ জাতীয় প্রার্থনা করে সাধারণত ধর্মীয় সাম্যবাদ তৈরির চেষ্টা করা হয়। অথচ ধর্মীয় সাম্যবাদ ইসলাম অস্বীকৃতির শক্তিশালী এক উপাদান। তো দেখা যাচ্ছে, একটি প্রার্থনা একজন মানুষকে তার ধর্মাদর্শের গণ্ডি থেকেই বের করে দিচ্ছে।

সুতরাং এখন ব্যক্তিকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, সে মুসলমানিত্ব গ্রহণ করবে নাকি ধর্মীয় সাম্যবাদ বা ধর্মীয় উদারতা গ্রহণের নামে এক মুহূর্তেই ধসিয়ে দিবে নিজের মুসলমানিত্বের প্রাচীর!

পোস্টটি লাইক ও শেয়ার করুন।

একটি মন্তব্য লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *