বাইতুল্লাহর কড়চা-৩

মুফতী হাফিজুর রহমান

সকাল ০৯.৪২, শুক্রবার, ২৬-০৭-১৯, কাবা প্রাঙ্গন

গত ক’দিনে বেশ ক’টি জায়গায় যাওয়া হলো। মাকবারায়ে মুআল্লা তন্মধ্যে অন্যতম। এখানে খাদিজা রা. এর কবরসহ অন্যান্য সাহাবায়ে কেরামের কবরও রয়েছে। সাহাবায়ে কেরামের কবরগুলো আলাদা প্রাচীরে ঘেরা। প্রকাণ্ড ফটকে তালাবদ্ধ। ভেতরে প্রবেশের অবকাশ নেই। কোনটা কার কবর তাও সনাক্ত করার সুযোগ নেই। তুর্কি শাসন কালে কবর সনাক্ত করার যথেষ্ট অবকাশ ছিলো। কবরে কবরে গম্বুজ শোভা পেত। তখন এসব কবরকেন্দ্রিক স্থাপনাগুলো শিরক বিদাতের আখড়ায় পরিণত ছিলো। তুর্কি প্রশাসন হয় এসব কাজে প্রত্যক্ষ সেল্টার দিয়েছে না হয় পরোক্ষ সহযোগিতা দিয়ে উদাসিনতার পরিচয় দিয়েছে।

সৌদি শাসন প্রতিষ্ঠার প্রধানতম ব্যক্তিত্ব বাদশাহ আব্দুল আজিজ সাহাবায়ে কেরামের কবরে নির্মিত সকল স্থাপনা গুড়িয়ে দেন। এবং সকল সমাধিগুলোকে সমতল ভূমিতে পরিণত করেন। সৌদি রাজত্বের পুরোধা ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদ বিন সাউদও এ জাতীয় সংস্কারে হাত দিয়েছিলেন। তুর্কি প্রশাসনের সহায়তায় সেগুলোর কিছু কিছু পুনঃনির্মাণও হয়। বাহ্যত এ জাতীয় সংস্কার বেশ আপত্তিকর ও গর্হিত বলে মনে হয়। বাদশাহ আব্দুল আজীজ রহ. এখানে দুটি কাজ করেছেনে। ১। সমাধির উপরস্থ স্থাপনাগুলো গুড়িয়ে দেয়া। ২। সমাধিগুলো নিশ্চিহ্ন করে দেয়া। প্রথমটা শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে আবশ্যকীয় ছিলো। কারণ ইসলামী শরীয়তে কবরের উপর স্থাপনা তৈরির ব্যাপারে চরম নিষেধাজ্ঞা এসেছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী রা.কে কবরকেন্দ্রিক স্থাপনা গুড়িয়ে দিতে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সুতরাং প্রথমটা অবশ্য করণীয় ছিলো। দ্বিতীয়টা শিরক বিদাতের ছিদ্রপথ রুদ্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় ছিলো। উমর রা. বাইয়াতে রিযওয়ান বৃক্ষ কেটে দিয়ে শিরক বিদাতের মূলোৎপাটন করেছিলেন।

রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আয়িশা রা. এর কুঠরিতে সমাহিত করার পেছনেও এমন একটি সহায়ক প্রেক্ষাপট কাজ করেছে বলে একটি সূত্রের সন্ধান পাওয়া যায়। ঘটনাটির বিবরণ নিম্নরূপ, গাফরার মুক্তিপ্রাপ্ত দাস উমর বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কোথায় সমাহিত করা হবে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্যে সাহাবীগণ সমবেত হলেন। একজন বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেখানে নামাজ আদায় করতেন সেখানেই সমাহিত করা হোক। এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে আবু বকর রা. বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে পূজোর মূর্তিতে পরিণত করা থেকে আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন। অন্যরা বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বাকিউল গারকাদে দাফন করা হোক, যেখানে তাঁর মুহাজির ভ্রাতামণ্ডলীকে দাফন করা হয়েছে। এ অভিমত প্রসঙ্গে আবু বকর রা. বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আলবাকীতে দাফন করার প্রস্তাবটি খুবই অপসন্দনীয়। কারণ কিছু মানুষ তাঁর কাছে গিয়ে আশ্রয় কমানা করবে। অথচ এটা একমাত্র আল্লাহর অধিকার। তাই আমরা যদি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে উন্মুক্ত প্রান্তরে দাফন করি তবে তাঁর মাকবারাকে যত সতর্কতার সাথেই পাহাড়া দেই না কেন আমরা আল্লাহর অধিকার ক্ষুণ্ন করবো।…তাহযীরুস সাজিদ লিলআলবানী
উপরন্তু সমাধিকে চিহ্নিত করে চির অমর করে রেখে দেবারও কোন বিধান ইসলামিক নীতি শাস্ত্রে নেই।

তুর্কি শাসন আমলে বাইতুল্লাহকে ঘিরে নামাজের চারটি মেম্বার রচিত হয়েছিলো। হানাফী মেম্বার, শাফী মেম্বার, হাম্বলী মেম্বার এবং মালেকী মেম্বার। পর্যায়ক্রমে বাইতুল্লাহ চত্তরে চারটি জামাত অনুষ্ঠিত হতো। এক মাজহাবের অনুসারীগণ অন্য ইমামের পেছনে নামাজ পড়তো না। দৃশ্যগত বিবাদের নেতিবাচকতা ছাড়াও এ নিয়ে সমস্যার শেষ ছিলো না। ধর্মবিদগণও এ নিয়ে মহা বিপাকে পড়ে যান। তুর্কি প্রশাসন ছিলো হানাফী মাজহাব আশ্রিত। তাই হানাফী মেম্বারের অবয়ব-আকৃতি ও জৌলুস ছিলো চোখে পড়ার মত। এ মেম্বার ছিলো দ্বিতল বিশিষ্ট। তুর্কি শাসনকালীন বাইতুল্লাহর চিত্রে এখনো চারটি মেম্বার চোখে পড়ে। তাতে দ্বিতল বিশিষ্ট হানাফী মেম্বারকে খুব সহজেই সনাক্ত করা যায়। বাদশা আব্দুল আজীজ এসে চারটি মেম্বারকেই তুলে দেন। এবং পূর্ণ বাইতুল্লাহকে এক জামাতের অধীনে নিয়ে আসেন। একাধিক জামাতের হাত থেকে মসজিদে নববীও মুক্ত ছিলো না।

মক্কায় দুটি যাদুঘর রয়েছে। মূলত যাদুঘর একটিই। সেটা মুতহাফু মক্কাহ বা মক্কা মিউজিয়াম নামে পরিচিত। দ্বিতীয়টি মূলত শুধু বাইতুল্লাহ ও মসজিদে নববীকেন্দ্রিক পুরাকৃতি নিয়ে গড়ে উঠা একটি সংগ্রহশালা। এর আরবী নাম معرض عمارة الحرمين المسجد الحرام والمسجد النبوي -মা’রাজু ইমারাতিল হারামাইন আলমাসজিদিল হারাম ওয়াল মাসজিদিন নাবাবী (মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববীর নির্মাণকেন্দ্রিক সংগ্রহশালা)। দুটোতেই যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। মক্কা যাদুঘর কিছুটা সমৃদ্ধ হলেও দর্শনার্থীদের যাতায়াত নিতান্তই অপ্রতুল। গড়পড়তায় আমরা চার-পাঁচজন মিলে দ্বিতল বিশিষ্ট যাদুঘরটি ঘুরে দেখেছি। আর কেউ ছিলো না। তবে মক্কা মা’রাজে উপচে পড়া ভীড় লক্ষ করা গেছে। ওখানকার প্রবাসী বাংলাদেশীদের নিকট এ দুটি সংগ্রহশালা ছোট যাদুঘর ও বড় যাদুঘর নামে পরিচিত। মিউজিয়ামটি ছোট আর মা’রাজটি বড়। তবে আমার কাছে মিউজিয়ামটিকে বড় মনে হয়েছে। পক্ষান্তরে এটি দ্বিতল বিশিষ্ট। মা’রাজটিতে বাইতুল্লাহ সংশ্লিষ্ট অনেক পুরনো জিনিস থাকায় এর প্রতি দর্শনার্থীদের আগ্রহের মাত্রা বেশি। তবে এ দুটি সংগ্রশালাতে অনেক কিছু থাকলেও সামগ্রিক অর্থে সমৃদ্ধ নয়। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সাহাবায়ে কেরাম, বাইতুল্লাহ ও মসজিদে নববী সংশ্লিষ্ট দেখার মত আগ্রহব্যাঞ্জক পুরাকৃতিগুলো তুর্কি খেলাফত ভাঙ্গার সময় তুরস্কে সরিয়ে নেয়া হয়। কাজটি নিতান্তই অশোভনীয় একটি কাজ হয়েছে। কেউ এটাকে তস্করবৃত্তি হিসেবে আখ্যায়িত করলেও খুব বেশি দোষণীয় হবে না।

গত শনিবার জাবালে সাওরে চড়েছিলাম। সদস্য সে তিনজনই। সাথে একজন যুক্ত হয়েছিলো। কিন্তু বেচারা কিছুটা চড়েই ক্ষ্যান্ত দিয়েছিলো। সাহসে সীমাবদ্ধতা ছিলো। এখানে দৈহিক শ্রম দিতে হয়। তাই বলে তা অসহনীয় পর্যায়ের নয়। এখানে সাহসী শক্তিটাই বড় বিষয়। তা না হলে নিছক দৈহিক শক্তি দিয়ে এসব পাহাড়ে চড়া সম্ভব নয়। আমাদের মনে ভয় ধরিয়ে দেয়া হয়েছিলো, সাওর গুহায় পৌঁছুতে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা লেগে যাবে। কিন্তু আমরা এক ঘণ্টা পাঁচ মিনিটেই সাওর চূড়ায় পৌঁছুতে সক্ষম হই। গারে হেরার তুলনায় এখানে চড়তে আমার কাছে কিছুটা সহনীয় পর্যায়ের বলে মনে হয়েছে। মূল চূড়াটা কিছুটা সমতল। এখানে একটি কার্পেট বিছিয়ে দেয়া হয়েছে। সামান্য পানাহার সামগ্রী সাথে নিয়ে এসেছিলাম। আমার নাস্তাসামগ্রীর আইটেমে ছিলো বাংলাদেশী কেক। পাহাড় চূড়ায় অনেক আরব্য বিড়ালের বসবাস। আরবের হলেও আমাদের দেশীয় বিড়ালের তুলনায় বেশি স্বাস্থ্যবান নয়। চেহারা সূরত অবিকল এক। কেক খাচ্ছি। বিড়ালগুলোকেও নাস্তাভোজনে অংশগ্রহণের সুযোগ দিচ্ছি। ওরা খাবার দাবারে দেখলাম বেশ নিয়ন্ত্রিত। যা তা খায় না। সাথীরা বিস্কুট এগিয়ে দিচ্ছে। ওতে ওদের আগ্রহ হচ্ছে না। ঘ্রাণ গ্রহণ পর্যন্তই সার। আমি কেক এগিয়ে দিলাম। আমার কেক ওদের বেশ পসন্দ হলো। রীতিমত যুদ্ধ করে আমার দেয়া কেক খেয়ে নিচ্ছে। পাহাড়ভোজনে বিড়ালগুলো আমাদের এ্যাক্টিভ পার্টনার। আমরা মেজবান, বিড়াল মেহমান। অথচ হওয়ার কথা ছিলো উল্টো। শেষ দিকে একটি কেক পড়ে আছে। আমরা কেউ একজন খাবো ভাবছিলাম। আমরা চার দিকের নির্মল প্রকৃতিতে দৃষ্টি বুলাচ্ছি। এ সুযোগে জনৈক বিড়াল মহাশয় এসে কেকটাকে তুলে নিয়ে যায়। অতিথির এ কেমন তস্করবৃত্তি! মেজবান না হয়ে হলে মেহমান। উপরন্তু করলে তস্করবৃত্তি!! লজ্জা পাবে বলে অতিথি বিড়ালটিকে কিছুই বলা হলো না। এদের তো মূলত কোনো অপরাধ নেই। পরকাল ওদের পরিষ্কার। আল্লাহই এদের কিছু বলবে না। আমরা আর কি বলবো। উপরন্তু নবীর দেশের বিড়াল। একটা সম্মান আছে না!

গত কদিনে জিয়িররানা ও মাদরাসায়ে সাওলাতিয়্যায় যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। এখন হেরেম শরীফে বসে আছি। চার পাশে চোখ ঝলসানো আয়োজন। পুণ্যার্থীরা বাইতুল্লাহকে ঘিরে তাওয়াফ করে চলছেন। ব্ল্যাক স্টোনে সর্ব সময়ে বড় ধরনের একটি জটলা লেগে থাকে। এখনো আছে সেটি। জটলাটি বেশ দুর্ভেদ্য ও মরণঘাতী। মরণাপন্ন হয়ে ওখান থেকে বেরিয়ে আসার দৃশ্য সচরাচরই চোখে পড়ে। নারী পুরুষের চাপায় পড়ে বুক ফাটা আর্তচিৎকার সময় সময়েই শোনা যায়। কারো মাথা নিচু হলে ওখান থেকে উঠে আসবার জো নেই। ওখান থেকেই তাকে চির বিদায় নিতে হবে। ক’ বছর আগে এক মিশরী নারীর বুক চিরে দরদর করে রক্তের ধারা প্রবাহিত হবার মর্মান্তিক দৃশ্য এখান থেকেই দৃশ্যমান হয়েছে। পবিত্র এ বস্তুটিকে নিয়ে মরণঘাতি এমন হুড়োহুড়ি বিষয়ে বোধ হয় শরয়ী বিধানও সমর্থন দিবে না। একটি নফল আমলের জন্য নিজেকে এমন মরণাপন্ন রিক্সে ফেলে দেয়া ও অন্যকে নিজের সবটুকু জোর খাটিয়ে মর্মান্তিক কষ্টের মুখে ফেলে দেয়াটা তো কোনো শাস্ত্রেই বিধানিক হবার কথা নয়। অনেকেই গর্ব করে বলে, আমি হাজরে আসওয়াদে চুমু এঁকে এসেছি। আমাকে গর্ব ভরে বলতে ইচ্ছে করে, আমি হাজরে আসওয়াদে চুমু দিতে পারিনি।

হাজরে আসওয়াদ মানে কৃষ্ণ পাথর। এটা মূলত ছিলো শ্বেত পাথর। মানুষের চুমোয় চুমোয় আজ এটি কালো পাথরে পরিণত হয়েছে। তবে এর দৃশ্যমান অংশটিই শুধু কালো। এর ভিতরাংশ এখনো সফেদ-সাদা। পাথরটি এখন আস্ত নেই। এটি কয়েক খণ্ডে বিভক্ত হয়ে আছে। ওগুলোকে জড়ো করে কা’বা কর্ণারে বসিয়ে দেয়া হয়েছে।

বহু দিন আগের কথা। হাজী বেশে এক মিশরী এলো। সবাই তখন আরাফা প্রান্তরে। মিশরীটির স্কন্দে প্রকাণ্ড এক হাতুড়ি। ধীরে ধীরে সে কালো পাথরটির দিকে এগিয়ে যায়। আশপাশে অল্প কজন যারা আছে তারা ভাবছে লোকটি চুমু দিতেই এগিয়ে যাচ্ছে। পাথরের সন্নিকটে গিয়ে মিশরী সুঠাম দেহের সুউচ্চ মানুষটি কাঁধের হাতুড়ি হাতে তুলে কালো পাথরটির উপর প্রচণ্ড এক আঘাত বসিয়ে দেয়। আর মনের সবটুকু ক্ষোভ মিশিয়ে বলে, হে পাথর! তোকে আর কত কাল এভাবে উপাসনা করা হবে? কথা শেষ হতে না হতেই মিশরী লোকটি পুণ্যার্থীদের হাতে চলে যায়। তড়িৎ গতিতে আগুন জ্বালিয়ে লোকটিকে ভস্ম করে দেয়া হয়। তার সহযোগীদেরও সনাক্ত করে ধৃত করা হয়। তাদেরও মূল আসামীর ভাগ্য বরণ করতে হয়।

মাতাফের সুটিং দৃশ্যগুলো বেশ বেদনাদায়ক। একটি ইবাদাত পালন করছে। সেখানে একেকজন এসে নায়ক নায়িকার ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছে। ড্রামা করার তো একটি জায়গা আছে। যেখানে সেখানে কি এসব ড্রামা সুটিং করা চলে। বাইতুল্লাহ চত্তর যদি সুটিং স্পটে পরিণত হয় তাহলে এর মর্যাদা কোথায় গিয়ে ঠেকে তা কি কখনো উপলব্ধি করেছি। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। আমাদের সুমতি দান করুন।

বাইতুল্লাহ এখন আর আগের বাইতুল্লাহ নেই। বাইতুল্লাহ যেমন ধর্মীয় দিক থেকে আকর্ষণীয় তদ্রূপ জাগতিক দিক থেকেও দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। বাইতুল্লাহ যুগে যুগে আকর্ষণীয় থেকে আকর্ষণীয়তর হয়ে উঠার পেছনে প্রশাসকদের প্রতিযোগী মনোভাব বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছে, রাখছে।

পোস্টটি লাইক ও শেয়ার করুন।

একটি মন্তব্য লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *