মাওলানা ইরফান জিয়া
ষষ্ঠ কিস্তি
[প্রিয়তম নামসমূহ]
নবীজীর অনেকগুলো নাম রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে কিছু এই।
প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
‘আমি-
মুহাম্মাদ (প্রশংসিত),
আহমাদ (অধিক প্রশংসাকারী),
মাহী (মোচনকারী) আমার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা কুফরকে
মিটিয়ে দেবেন।
আমি- হাশির (সমবেতকারী) লোকদেরকে আমার পায়ের কাছে
সমবেত করা হবে।
আমি- আকিব (সর্বশেষ আগমনকারী) সুতরাং আমার পর কোনো
নবী নেই।১
অন্য এক বর্ণনায় আছে, আমি- মুকাফফী (অনুগমনকারী),
নাবিয়্যুত তাওবাহ (তাওবার নবী),
নাবিয়্যুর রাহমাহ (রহমতের নবী)। ২
সহীহ মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে-
নাবিয়্যুল মালহামা (যুদ্ধেরনবী)৩
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার মহাগ্রন্থে নবীজীকে নাম
দিয়েছেন-
বাশীর (সুসংবাদ প্রদানকারী),
নাযীর (ভীতি প্রদর্শনকারী),
সিরাজুম মুনীর (দীপ্তপ্রদীপ),
রাউফ রাহীম (স্নেহপরায়ণ-দয়াদ্র),
রাহামতুল্লিল আলামীন (জগত সমূহের জন্য রহমত),
মুহাম্মাদ (প্রশংসিত),
আহমাদ (অধিকপ্রশংসাকারী),
ত্বহা,
ইয়াসীন,
মুযযাম্মিল (চাদর আবৃত)
মুদ্দাস্সির (বস্ত্রাবৃত)।
সূরা বানী ইসরাইলের প্রথম আয়াত
سُبْحَانَ الَّذِي أَسْرَى بِعَبْدِهِ لَيْلًا
এখানে বলা হয়েছে আবদ (বান্দা)।
সূরা জিন্ন এর ১৯ ন. আয়াত
وَأَنَّهُ لَمَّا قَامَ عَبْدُ اللَّهِ يَدْعُوهُ
এখানে বলা হয়েছে- আব্দুল্লাহ (আল্লাহর বান্দা),
সূরা হিজরের ৮৯ আয়াত
وَقُلْ إِنِّي أَنَا النَّذِيرُ الْمُبِينُ
বলা হয়েছে- নাযীরুম মুবীন ( সুস্পষ্ট ভীতিপ্রদর্শনকারী),
সূরা গাশিয়ার ২১ ন. আয়াত
إِنَّمَا أَنْتَ مُذَكِّرٌ
বলা হয়েছে- মুযাক্কির (উপদেশ দানকারী)।
এগুলোর অধিকাংশই গুণবাচক নাম। এগুলো ছাড়াও নবীজীর আরো
অনেক নাম আছে।
টীকা:
১. সহীহ বুখারী: ৩৫৩২, সহীহ মুসলিম: ২৩৫৪
২. সহীহ মুসলিম: ২৩৫৫, সহীহ ইবনে হিব্বান: ৬৩১৪, আহমাদ: ৪/৩৯৫
৩. রহমতের নবী ও যুদ্ধের নবী। বাহ্যত পরস্পর সাংঘর্ষিক দু’টি বিষয়। কিন্তু বাস্তবে কোনো বৈপরিত্য নেই।
পূর্ববর্তী নবীদের উম্মত কোনো পাপাচারে লিপ্ত হলে সাধারণত তাদেরকে আকস্মিক আযাবে গ্রেফতার করা হতো। কিন্তু এ উম্মতের বেলায় আল্লাহ তা‘আলা সাধারণত আকস্মিক আযাব দেন না। বরং পাপাচার বন্ধ করার জন্য জিহাদের আদেশ দিয়েছেন। জিহাদের মাধ্যমে পাপাচার বন্ধ হয়। আর পাপাচার বন্ধ হওয়ার ফলে উম্মত আকস্মিক আযাবে নিপতিত হওয়া থেকে বেঁচে যায়।
সুতরাং দেখা গেলো জিহাদের মধ্যে সুস্পষ্ট রহমত রয়েছে।