কলমারচর। একখণ্ড সবুজ ভূমি। কথ্য ভাষায় পবিত্র কালিমা কলমা শব্দে রূপান্তরিত হয়েছে। পাখি ডাকা ছায়া ঢাকা এক সুনির্মল মায়াবী গ্রাম। চার দিকে সবুজের অপরূপ আয়োজন। দর্শনার্থীকে মোহিত করার মত যথেষ্ট শক্তি রাখে শ্যামলিমা এ সুন্দর গ্রামখানি। খরস্রোতা বুড়িগঙ্গার গা ঘেষে আবহমান বাংলার গ্রামীণ এ দৃশ্য সত্যিই মুগ্ধতা এনে দেয়। নাগরিক জীবনের দুয়ার ঘেষে গ্রামীণ আবহের এ মনকাড়া আয়োজন মানব মনে শিল্পিত চিত্রপট তৈরি করে দেয় খুব সহজেই।
অনিন্দ্য সুন্দর এ সবুজ ভূমিতেই গড়ে উঠেছে দ্যুতিময় বিদ্যানিকেতন দারুল আবরার মাদরাসাটি। মা’হাদুল বুহুসিল ইসলামিয়ার একান্ত নিজস্ব তত্ত্বাবধানে চলছে এর যাবতীয় কার্যক্রম। ওহীভিত্তিক এ প্রস্রবণটিকে একটি উন্নত ও মানসম্মত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে ইতোমধ্যে বেশ কিছু পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। তন্মধ্য হতে বেশ কিছুর কার্যক্রম যথা নিয়মে শুরু হয়ে গেছে। সবুজে ঘেরা এ প্রতিষ্ঠানটিকে মসজিদ-মাদরাসা কম্প্লেক্স হিসেবে গড়ে তুলতে মাদরাসা সংলগ্ন ১০ শতাংশ ভূমিও ইতোমধ্যে মসজিদের জন্য বায়না রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে।
মা’হাদুল বুহুসিল ইসলামিয়া তার সবটুকু দিয়ে সমৃদ্ধ একটি প্রতিষ্ঠান গড়ার মাধ্য দিয়ে একটি আলোকিত কলমার চর গড়ে তুলতে চায়। এ স্বপ্ন ও পরিকল্পনাকে সামনে রেখেই গত ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮ রোজ শনিবার অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো মা’হাদুল বুহুসিল ইসলামিয়ার শাখা দারুল আবরা মাদরাসার অভিভাবক সম্মেলন। ছাত্র ও অভিভাবকদের সম্মিলিত আয়োজনে অনুষ্ঠিত মজলিসটি চমৎকার একটি অনুষ্ঠানে পরিণত হয়।
মা’হাদের মূল কেন্দ্র থেকে ছাত্র শিক্ষকগণ এসে অনুষ্ঠানের যাবতীয় কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করেন। পর্যায়ক্রমে মা’হাদের মুদীর ও উস্তাদবৃন্দ গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা পেশ করেন। মূল আলোচক হিসেবে ছিলেন উত্তর বঙ্গের বিশিষ্ট আলেমে দীন, আল জামিআতুল ইসলামিয়া এমদাদুল উলূম আখতার নগর (মোলামগাড়ী মাদরাসা) বগুড়া-এর স্বনামধন্য প্রিন্সিপ্যাল, আরেফ বিল্লাহ শাহ হাকীম মুহাম্মদ আখতার রহ. এর বিশিষ্ট খলীফা হযরতুল আল্লাম মাওলানা শামছুল আলম সাহেব দা.বা.।
বর্ণাঢ্য এ অনুষ্ঠানে উচ্ছ্বসিত অভিব্যক্তি পেশ করেন দারুল আবরার মাদরাসর জমি দাতা ও প্রতিষ্ঠাতা মুহতারাম সিফাতউল্লাহ সাহেব। এ মাদরাসার যাবতীয় দায়ভার মা’হাদ কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করায় তিনি অতিশয় আনন্দ প্রকাশ করে আল্লাহর শুকরিয়া জ্ঞাপন করেন। সিফাতউল্লাহ সাহেবের বড় ভাই মুহতারাম মিজানুর রহমান সাহেব অতিশয় আবেগানন্দে অভিব্যক্তি পেশ করতে গিয়ে নির্বাক হয়ে পড়েন। অশ্রুভেজা চোখে আবেগঘন ভাষায় কিছু কথা বলেন। এতে পুরো অনুষ্ঠান জুড়ে পিনপতন নীরবতা নেমে আসে। সকলেই তার আবেগাপ্লুত কথামালায় আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। অভিভাবকদের থেকেও অভিব্যক্তি গ্রহণ করা হয়। তারা মন খুলে অভিব্যক্তি পেশ করেন। মাদরাসার এ সুন্দর কর্মময় পথচলায় তারা সকলেই নন্দিত উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত সকলের জন্য প্যাকেটজাত খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। অনুষ্ঠানে মা’হাদ কমিটির প্রায় সকল সদস্যই অংশগ্রহণ করেন। তারা যোহরের পর পর্যন্ত এখানে সময় দেন। আল্লাহ এ প্রতিষ্ঠানটিকে উন্নত ও মানসম্পন্ন একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার তাওফীক দান করেন। আমীন।