প্রশ্ন : রোজা কত প্রকার ও কি কি প্রত্যেক প্রকারের বিধান জানতে চাই।
উত্তর : রোজা মোট ছয় প্রকার। যথা:
১. ফরয। যেমন, রমাযানের রোজা, কাফফারার রোজা।
২. ওয়াজিব। যেমন, মান্নতের রোজা, বিনা কারণে ভেঙ্গে ফেলা নফল রোজা কাযা রোজা।
৩. মাসনূন। যেমন, নবম অথবা এগারো তারিখসহ আশুরার রোজা।
৪. মানদুব। যেমন, প্রতি মাসের তের চৌদ্দ এবং পনের তারিখের রোজা, প্রতি সোম এবং বৃহস্পতিবারের রোজা এবং শাওয়ালের ছয় রোজা ইত্যাদি।
৫. নফল। যেমন, উপরোক্ত রোজা ব্যতীত অন্যান্য দিনের রোজা।
৬. মাকরূহ। মাকরূহ দুই প্রকার- ১. মাকরূহে তাহরিমী। যেমন, দুই ঈদে এবং আইয়ামে তাশরিকে রোজা পালন করা। ২. মাকরূহে তানযিহী। যেমন, নবম অথবা এগারো তারিখ ব্যতীত শুধু আশুরার দিনের রোজা আদায় করা।
উল্লেখ্য, অবশ্য পালনীয় রোজা মোট তেরো প্রকার। তন্মধ্য হতে সাত প্রকারের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা আবশ্যক। যথা : ১. রমাযানের রোজা ২.কাফফারায়ে কতলের রোজা (হত্যা প্রসূত প্রায়শ্চিত্তের রোজা) ৩. কাফফারায়ে ইয়ামীনের রোজা (শপথ ভঙ্গ প্রসূত প্রায়শ্চিত্তের রোজা) ৪. কাফফারায়ে জেহারের রোজা (স্ত্রীকে মায়ের সাথে তুলনা করার প্রায়শ্চিত্তের রোজা) ৫. ইচ্ছাপূর্বক রমাযানের রোজা ভেঙ্গে ফেলার কাফফারার রোজা ৬. নির্দিষ্ট মান্নতের রোজা ৭. অনির্দিষ্ট মান্নতের রোজা (যদি এদুই মান্নতের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতার নিয়ত করা হয়ে থাকে)। তবে প্রথম প্রকার এবং সপ্তম প্রকার ব্যতীত বাকি পাঁচ প্রকার রোজার ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা ভেঙ্গে ফেলা হলে নতুন করে শুরু থেকে রোজাগুলো ধারাবাহিকভাবে পালন করতে হবে। রমাযানের রোজা এবং নির্দিষ্ট মান্নতের রোজার ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা রক্ষা না হলে রোজাগুলো শুরু থেকে পালন করতে হবে না। আর বাকি ছয় প্রকার রোজার ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা আবশ্যক নয়। ছয় প্রকার রোজা হলো, ১. রমাযানের কাযা রোজা ২. মুত‘আর রোজা (হজ্জে তামাত্তুর ক্ষেত্রে কুরবানী পালন না করার রোজা) ৩. সময় আসার পূর্বে মাথা মুণ্ডানোর রোজা ৪. পশু শিকারের বিনিময়ে রোজা ৫. ধারাবাহিকতার নিয়ত না করা মান্নতের রোজা ৬. শপথের রোজা।
– সূরা বাকারা ১৯৫, সূরা মায়িদা ৯৪, সহীহ বুখারী হাদীস ১৯২৪, ১৯৭৫, ১৯৮১, ১৯৮৪, ১৯৯০,১৯৯৮,২০০১, সহীহ মুসলিম হাদীস ১১৬২, ২৫৬৫, সুনানে আবুদাউদ হাদীস নং ২৪৫১, ফাতহুল কাদীর ৪/২৬৯, রদদুল মুহতার ৭/৩২৮, হাশিয়াতুত তহতবী আলা মারাকিল ফালাহ ৬৩৮, আলমাউসুআতুল ফিকহিয়্যা ২৮/৮, ৯, মাসায়েলে রোজা ৮৪।