মুফতী সাঈদ আহমাদ
জনাব খালেদুয্যামান একজন দীনদার নওজোয়ান। আইইউটি (ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি) গাজীপুর থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ বিএসসি পাস করে এখন এসএমও ফাউন্ডেশনে চাকরি করেন। মা-শা-আল্লাহ জাগ্রত মস্তিষ্কের অধিকারী। দাম্পত্য জীবনে মাত্র নয়-দশ মাসের এক কন্যা সন্তানের পিতা। শ্বশুর-শাশুড়ি, কন্যা সন্তান ও স্ত্রীসহ পাঁচজন মিলে এবার হজের সফর করে আসলেন।
মদীনা মুনাওয়ারায় অবস্থানকালে একদিন জান্নাতুল বাকীতে যিয়ারতের উদ্দেশে প্রবেশ করে দেখলেন, একজন বাংলাদেশি আলেমকে ঘিরে কিছু হাজী জড়ো হয়ে কথা শুনছেন। আলেম সাহেব নিজের পরিচয় দিচ্ছেন মদীনা ইসলামিক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী হিসেবে। জান্নাতুল বাকীতে সহীহ আকীদা প্রচার ও শিরক-বিদ‘আত দমনের কাজ আঞ্জাম দিচ্ছেন। আলেম সাহেব বর্তমান সালাফী (লা-মাযহাবী) আলেমদের ন্যায় শিরক-বিদ‘আতকে বধ করতে গিয়ে যিয়ারতের জায়েয বরং সুন্নাত তরীকাকেও রদ করে যাচ্ছেন নির্দ্বিধায়। বলছেন,
কবর যিয়ারতে ‘আস্সালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল কুবূর’ এভাবে সালাম পেশ করা ছাড়া আর অন্য কোনো আমল জায়েয নেই। যিকর, তিলাওয়াত ইত্যাদি করে ঈসালে সওয়াব করলে মৃতদের কোনো কাজে আসবে না।
অথচ যিকর ও তিলাওয়াত ইত্যাদির দ্বারা ঈসালে সাওয়াবের মাসআলাটি মুজতাহিদ ইমামগণের মাঝে একটি ইজতিহাদী মাসআলা। সহীহ মুসলিম-এর ব্যাখ্যাকার শাফিয়ী মাযহাবের প্রসিদ্ধ ইমাম আল্লামা নববী রহ. সহীহ মুসলিম-এর ভূমিকায় একটি রেওয়ায়েতের প্রাসঙ্গিক আলোচনায় উল্লেখ করেন,
وأما قراءة القرانفالمشهور من مذهب الشافعى رحمه الله تعالى انه لا يصل ثوابها الى الميت وقال بعض اصحابهيصل ثوابها الى الميت وذهت جماعات من العلماء الى انه يصل الى الميت ثواب جميع العباداتمن الصلاة والصوم والقراءة وغير ذلك
অর্থ : কুরআন তিলাওয়াতের ব্যাপারে ইমাম শাফিয়ী রহ.-এর প্রসিদ্ধ মত হলো, মাইয়িতের আমলনামায় এর সওয়াব পৌঁছে না। অবশ্য তার কতক শিষ্যের মতে মাইয়িতের আমলনামায় তিলাওয়াতের সওয়াব পৌঁছে। আর আলেমগণের অনেকের মতে নামায, রোযা, তিলাওয়াতসহ সকল ইবাদাতের সওয়াব মাইয়িতের আমলনামায় পৌঁছে। (শরহু সহীহি মুসলিম ১/৫৫)
ইমাম নববী রহ.-এর বক্তব্যে স্পষ্ট প্রমাণিত যে, তিলাওয়াতের মাধ্যমে মাইয়িতকে সওয়াব পৌঁছানোর বিষয়টিতে পক্ষে বিপক্ষে মুজতাহিদ ইমামগণের মতামত থাকলেও পক্ষের মতটির পক্ষে রয়েছেন অনেক উলামায়ে মুজতাহিদ। এমনকি স্বয়ং ইমাম শাফিয়ী রহ.-এর কিছু শাগরেদও তিলাওয়াতের সওয়াব পৌঁছার মত পোষণ করেন। উল্লেখ্য, সদকায়ে জারিয়ার সওয়াব মাইয়িতের আমলনামায় পৌঁছার বিষয়টি তো সহীহ হাদীসে স্পষ্টই উল্লেখ রয়েছে। ইমাম শাফিয়ী রহ. ছাড়া অন্য ইমামগণ অন্যান্য নফল ইবাদাতকেও সদকায়ে জারিয়ার মতোই গণ্য করেছেন। উপরন্তু, এর স্বপক্ষেও কয়েকটি হাদীস বিদ্যমান রয়েছে। কাজেই বর্তমানে কোনো যিয়ারতকারী কবরের নিকটে দাঁড়িয়ে কিছু সূরা তিলাওয়াত করে মুর্দার নামে সওয়াব পৌঁছাতে চাইলে এটা এমন কোনো গর্হিত কাজ নয়Ñ যার জন্য মদীনা ইউনিভার্সিটির আলেমদের দিনের পর দিন প্রচারণা চালাতে হবে। বিশেষ করে এমন জায়গায়, যেখানে সকল মাযহাবের লোকেরা যিয়ারতের উদ্দেশ্যে গিয়ে থাকে। সেখানে এমন একপেশে মাসআলা বর্ণনা করা ইলমী আমানতদারীর সম্পূর্ণ বিপরীত। অথচ জান্নাতুল বাকী ও তার আশপাশে যে সকল আলেম মাসায়িল বয়ানে নিয়োজিত থাকেন তাদের প্রায় সকলে এমনটিই করেন। যেখানে মাসআলাটি বয়ান না করলেও চলে সেখানে বয়ান করতে হলে ইমাম নববীর মতো পূর্বসূরিদের অনুসরণে পক্ষ-বিপক্ষ উভয় দিক তুলে ধরা ছিল একজন দায়িত্বশীল আলেমের কাজ। কিন্তু বর্তমানে সালাফী তথা লা-মাযহাবী আলেমদের মাঝে এতটুকু বিবেকবোধ লক্ষ করা যায় না।
আলেম সাহেবের দ্বিতীয় প্রসঙ্গটি ছিল আরো দায়িত্বজ্ঞানহীন। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল প্রচলিত তাবলীগ জামাআতের দাওয়াতের পদ্ধতি সম্পর্কে। তিনি সৌদির গ্র্যান্ড মুফতী আব্দুল্লাহ বিন বায রহ.-এর বরাত দিয়ে বললেন,
তাবলীগের দাওয়াতের পদ্ধতি সঠিক নয়। কারণ চিল্লা, তিন চিল্লা, তিন দিনের জন্য আল্লাহর রাস্তায় বের হওয়া, ছয় উসূল ইত্যাদির শরীয়তে কোনো ভিত্তি নেই; বরং নব আবিষ্কৃত। কাজেই এভাবে দাওয়াতের কাজ করা জায়েয নয়। তাছাড়া প্রথমে নিজেদের ঈমান ও নিজ ঘর ঠিক করা উচিত, এরপর অন্যকে দাওয়াত দিবে।
আলেম সাহেবের এ উত্তরের পর জনাব খালেদুয্যামান আর চুপ থাকতে পারলেন না। তিনি বললেন,
দেখেন হুযূর! তাবলীগে যাওয়ার উদ্দেশ্যে অন্যদেরকে দীন ও ঈমানের দাওয়াত দেওয়া যতটুকু তার চেয়ে অনেক বেশি নিজের দীন ও ঈমান ঠিক করা। আমাদের দেশে এক হাজার রিকশাওয়ালাকে জিজ্ঞেস করে দেখবেন এক-দু’জনও শুধু কালিমাটুকুও সহীহ করে বলতে পারে না। তো এরা কার কাছে নিজেদের ঈমান ঠিক করবে? আর কীভাবে নিজেদের ঘর ঠিক করবে? সাউদী আরব আর আমাদের দেশের পরিস্থিতি কি এক? সাউদীতে একটা শিশু জন্ম নেয় ঈমানের পরিবেশে। আর আমাদের দেশগুলোতে জন্ম নেয় ঈমান পরিপন্থি পরিবেশে। ঘরে বসে ঈমান শিখার পরিবেশ এখানে কয়টি ঘরের মধ্যে আছে? বিন বায রহ.-এর ফাতওয়া যদি সঠিক হয়, আর চিল্লা, তিন চিল্লা ও ছয় উসূলের বিদ‘আতের কারণে যদি তাবলীগ না করা হয় তাহলে সহশিক্ষার পরিবেশে, ফেসবুক-ইন্টারনেটের আর মোবাইলের এ যুগে আমাদের মতো জেনারেল লাইনের ছেলেদের মাথায় টুপি আর মুখে দাড়ি কী করে আসবে?
খালেদুয্যামান সাহেবের এ জাতীয় কিছু যৌক্তিক প্রশ্নে আলেম সাহেব এক্ষেত্রে লা-জওয়াব হয়ে গেলেন।
আলেম সাহেবের মতো বর্তমানে আরো অনেক সালাফী আলেম এমনকি বাংলাদেশের অনেক আঁতেলকেও এ ধরনের মত ব্যক্ত করতে দেখা যায়। আমার মহল্লায় একজন ডক্টর সাহেব সম্ভবত ইসলামিক কোনো বিষয়ে পিএইচ.ডি লাভ করেছেন। বর্তমানে বাংলাদেশ ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে প্রফেসর এবং কোনো এক টিভি চ্যানেলের ধর্ম বিষয়ক প্রশ্নোত্তর প্রোগ্রামে দর্শকপ্রিয় ভাষ্যকার। তাকে আমাদের মসজিদের এক নওজোয়ান সাথি তিন দিনের দাওয়াত দিলে তিনি বললেন,
-তিন দিন, চিল্লা, তিন চিল্লা এসব সঠিক নয়; ভিত্তিহীন। এ ধরনের দাওয়াতের কাজে আমি যেতে পারি না।
সেই সাথি জিজ্ঞেস করল,
-স্যার! তিন দিন, চিল্লা, তিন চিল্লা এগুলোর কারণে দাওয়াত ও তাবলীগ অশুদ্ধ হলে আপনার ইউনিভার্সিটিতে পাঁচ বছর, ছয় বছরের কোর্স, বিভিন্ন মেয়াদের সেমিস্টার আর বিভিন্ন বিষয়ের উপর পিএইচ.ডি এগুলোর ভিত্তিতে ইসলামিক স্টাডিজ কী করে শুদ্ধ হয়?
ডক্টর সাহেব অন্তত আলিয়া লাইনের আলেমও ছিলেন, যে কারণে প্রশ্নের আঘাতটি সঠিকভাবে উপলব্ধি করেছেন এবং নিরুত্তর হয়ে গেছেন। সাধারণ জ্ঞানের আঁতেল হলে এ বাংলা প্রশ্ন বুঝতেও অক্ষম হতেন।
মদীনা ভার্সিটির আলেম সাহেবের তৃতীয় প্রসঙ্গটি ছিল আরো চমৎকার। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো,
-ডাক্তার জাকির নায়েক ও তার লেকচারসমূহের বিষয়ে আপনার মতামত কী?
উত্তরে তিনি বললেন,
-ডাক্তার জাকির নায়েক একজন বড়ো ইসলামী ব্যক্তিত্ব। অনেক বড়ো দাঈ ও জ্ঞানী। তার লেকচারসমূহ দীনের সঠিক উপস্থাপনা।
আলেম সাহেবের জবাবটা ঠিক আমাদের দেশের ঐ পাবলিক শ্রেণির জবাবের মতো যারা শুধু টিভি দেখেই দীন শেখে; আলেমদের কাছে দীন শেখার জন্য যায় না। নির্ভরযোগ্য কোনো আলেমের পরামর্শে বইপত্র পড়ার যাদের কখনো তাওফীক হয় না। অন্যথায় যে লোক নিজেই বলে আমি একজন ডাক্তার। কোনো আলেমের কাছে পড়ে ইলম শেখার ন্যূনতম স্বীকৃতি যার নেই, এমন লোককে বড়ো ইসলামী জ্ঞানী বলার কী যুক্তি থাকতে পারে? ডাক্তারি পড়েই যদি বড়ো ইসলামী ব্যক্তিত্ব হওয়া যায় তাহলে তারা এদেশে বসে বসে বুখারী ও মুসলিম-এর বাংলা অনুবাদ পড়লে কিংবা ‘পিস টিভি’ দেখলেও তো আলেম হতে পারতেন! মদীনা ভার্সিটিতে গেলেন কেন?
প্রথমে দাঈ ও দীন প্রচারকের বেশে জনপ্রিয় হয়ে পরে যিনি মুজতাহিদ ইমামগণকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সরাসরি কুরআনের আয়াত আর হাদীসের বরাতে ইজতিহাদী মাসআলাসমূহে নিজস্ব মতামতকে ব্যক্ত করেন অকাট্যভাবে। যার ফলে উপমহাদেশে ডাক্তার জাকির নায়েকের অনুসারীদের সমন্বয়ে অঘোষিত একটি স্বতন্ত্র মাযহাব কায়েম হতে চলেছে। মদীনা ভার্সিটিতে পড়–য়া একজন আলেম একজন ডাক্তার সাহেবের এমন ইজতিহাদী কর্মকা-কে দীনের সঠিক উপস্থাপনা কী করে বলতে পারেন?
আলেম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হলো,
-ডাক্তার সাহেব কোট, প্যান্ট, টাই ইত্যাদি পরিধান করেন কেন?
তিনি জবাব দিলেন,
-ডাক্তার সাহেব যে মহলে দীন প্রচার করেন সেখানে এ পোশাকই যথার্থ। আপনি কোট-প্যান্ট পরা লোকদের মাঝে জামা-জুব্বা পরে গেলে আপনার কথা তারা গ্রহণ করবে না।
আলেম সাহেবের এ জবাবে আমাদের দেশের কোনো কোনো ইসলামী রাজনৈতিক দলের দাড়ি না রাখার বা কেটে ছেটে ছোটো সাইজ করে রাখার যৌক্তিকতা বুঝে আসে। কিন্তু প্রশ্ন হলো এটা যদি দীন প্রচারের নীতি হয় তাহলে সুন্নাতে রাসূলের প্রচার কী করে হবে? বে-দীনের কাছে দীন পৌঁছাতে হলে প্রথমে তাদের বেশভুষা ধরতে হবে এ নিয়ম কবে থেকে শুরু হলো? অমুসলিম রাজ দরবারে খাবারের সময় সাহাবীগণের দস্তরখান থেকে পতিত খাবার উঠিয়ে খাওয়া, বরতন চেটে পরিষ্কার করে খাওয়া এবং টাখনুর উপরে উঠিয়ে কাপড় পরা আর এ কথা বলা যে, বেঈমান আহাম্মকদের খুশি করার জন্য আমরা আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাত ছাড়তে পারি না। সেই সাহাবী-যিন্দেগীর সাথে নবীজীর রওযার পাশে দ-ায়মান আলেম সাহেবের জবাবের মিল কতটুকু?
নিকট অতীতেও আমাদের দেশে দীনের নামে ও সালাফী মতবাদের নামে এ জাতীয় স্বেচ্ছাচারিতার উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো ছিল না। বর্তমানে তা ব্যাপক হারে আমদানি হচ্ছে মদীনা ভার্সিটি বা এ জাতীয় প্রতিষ্ঠানের সনদধারী আলেমদের মাধ্যমে। এদের মাথার উপরে রয়েছে আরবের কিছু দীন-দরদী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অনুগ্রহের হাতছানি।
আম্বিয়ায়ে কেরাম ও সাহাবায়ে কেরামের জন্মভূমি আরব দেশ। সেখানকার মুসলমানরা জন্মগতভাবেই শিরক-বিদ‘আতের প্রতি সংবেদনশীল ও সরল প্রকৃতির। তাদের দৃষ্টি নিজেদের প্রতি আকৃষ্ট করার মানসে ঐ আলেম সাহেবের মতো কিছু লোকেরা উপমহাদেশের হানাফী মাযহাবের হক্কানী আলেম-উলামা ও তাদের অনুসারীদেরকে তাদের কাছে পরিচিত করেছে শিরকপন্থি ও বিদ‘আতপন্থি হিসেবে। অথচ উপমহাদেশে হকপন্থি এ আলেমগণ ও তাদের অনুসারীরা বিদ‘আতী ও মাযার পুজারীদের কাছ থেকে আরবের ওহাবী খেতাব পেয়ে আসছেন বহু আগ থেকেই।
মাযহাব অনুসরণের প্রচলন গোটা বিশ্বেই এবং সেই সোনালি যুগ থেকেই। আফ্রিকায় বেশির ভাগ মালেকী, আরবে বেশির ভাগ হাম্বলী, তুর্কিতে সকলেই হানাফী, ইন্দোনেশিয়া ও শ্রীলঙ্কায় প্রায় সকলেই শাফেয়ী। এরা কেউ শিরকের অভিযোগে অভিযুক্ত নয়। অভিযুক্ত কেবল উপমহাদেশের হানাফীরা। পবিত্র হারামাইনে সব মাযহাবের লোকেরাই নামায পড়ছে এবং সকলের নামাযই সালাতুর রাসূল হচ্ছে। হয় না কেবল উপমহাদেশের হানাফীদের নামায। সেখানে কেউ কাউকে বলছে না যে, আপনার নামায সালাতুর রাসূল হচ্ছে না। কিন্তু আমাদের এখানে হানাফীদের নামায নবীজীর নামায নয় মর্মে যত পুস্তিকা ছাপানো ও বিতরণ করা হচ্ছে এবং যে হারে আযহারী, মাদানী ও ডাক্তার-কবিরাজরা বাংলা হাদীসের কিতাব, টিভি চ্যানেল ও ইন্টারনেট নিয়ে ময়দানে নামছেন তাতে মনে হয় এ যামানায় সবচে’ বড়ো জিহাদ হলো হানাফীদের নামায ও মাসায়িলকে বাতিল প্রমাণ করা।
এ পরিস্থিতির জন্য অনেকটা দায়ী উপমহাদেশের ধর্মপ্রাণ লোকদের অধিকাংশের মৌলিক দীনী শিক্ষা না থাকা, তাদের মাঝে আলেমদের কদর ও গুরুত্ব না থাকা। এদের একটা অংশ মনে করে, কুরআন-হাদীসের শিক্ষা একটা এজমালী সম্পত্তি। এটা অর্জনের কোন নিয়ম-নীতি নেই। নিজে নিজে অনুবাদ পড়েই শিক্ষিত হওয়া যায়। কুরআন পাকের তিলাওয়াত না জানলেও মুফাসসির হওয়া যায়। মাসায়িল বলার জন্য আলেম হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
উল্লেখযোগ্য সংখ্যক লোকও যদি কেবল সহীহ শুদ্ধভাবে কুরআন তিলাওয়াত করতে জানত তাহলেও বুঝতে পারত যে, দীনী শিক্ষায় হক্কানী আলেমদের জরুরত কত অপরিসীম। আর বিজ্ঞ আলেম হওয়া কত কঠিন কাজ। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সকলকে সহীহ সমঝ দান করুন। আমীন।
লেখক
উসতাদুল ইকতিসাদিল ইসলামী, মা’হাদুল বুহুসিল ইসলামিয়া
নায়েবে মুফতী, জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়া