মুহাম্মাদ ইরফান জিয়া
ইসলামপূর্ব যুগের কা’বা ঘর। একদিন এক মহিলা এ্রর চার পাশে ধূনি দিচ্ছিলো। হঠাৎ আগুনের একটা ফুলকি উড়ে গিয়ে লাগলো কা’বার গেলাফে। আগুন লেগে পুড়ে গেলো কা’বা ঘর।
সে সময়েও কা’বাকে সম্মান ও গৌরবের মাধ্যম মনে করতো কুরাইশ গোত্র। এ ঘরের রক্ষণাবেক্ষণের কাজকে তারা নিজেদের দায়িত্ব মনে করতো। নিজেদের কল্পিত-মিশ্রিত পদ্ধতিতে হলেও তারা খানায়ে কা’বার সম্মান প্রদর্শন করতো।
সে প্রেরণা থেকে কুরাইশ গোত্র কা’বা ঘর সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিলো। মক্কার লোকেরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এ কাজে অংশগ্রহণ করলো।
কাজের সুবিধার জন্যে সবাই ভেতরের স্বল্প বসন রেখে পরনের অতিরিক্ত কাপড় খুলে কাঁধে রেখে দিয়েছিলো। তারপর সে কাপড়ের ওপর বহন করছিলো পাথর। এতে সবাই পুরোপুরি অনাবৃত না হলেও তাদের সতর নিশ্চয় কাঙ্ক্ষিতভাবে ঢেকেও থাকছিলো না।
নবীজী তখন খুবই ছোট। একেবারেই বালক। তিনিও সেখানে উপস্থিত হয়ে পাথর বহন করতে লাগলেন। তবে অন্যদের মতো তাঁর কাধে কোন অতিরিক্ত কোন কাপড় ছিলো না। খালি কাঁধে পাথর বহন করতে কষ্ট হলেও তাঁরপক্ষে পরনের কাপড় খুলে কাঁধে রাখা সম্ভব ছিলো না।
নবীজীর চাচা আব্বাসও উপস্থিত ছিলেন এই কাজে। ভাতিজার কষ্ট দেখে তার মায়া হলো। তিনি বললেন, তুমিও কাপড়টা খুলে কাঁধে দিয়ে নাও, আরাম পাবে।
চাচা আব্বাস নবীজীর ওপর দয়াদ্র হয়ে নিজেই নবীজীর অতিরিক্ত কাপড় খুলে তাঁর ঘাড়ের ওপর রাখতে গেলেন। ভেতরের স্বল্প বসন নিশ্চয় ছিলো। তবু এতটুকু অনাবৃত হতেই নবীজী বেহুশ হয়ে জমিনে পড়ে গেলেন।
কিছুক্ষণ পর তার জ্ঞান ফিরে এলো। জ্ঞান ফেরার পরই তিনি বলতে লাগলেন, আমার কাপড়! আমার কাপড়!
নবীজীকে কাপড় পরিয়ে দেয়া হলো। এরপর থেকে কোনোদিন তার সতর সামান্যতম খোলাও দেখেনি কেউ।
* সহীহ বুখারী, হাদীস: ৩৮২৯, শরহুল আল্লামা আযযুরকানী: ১/৩৮৩।