চলতি শিক্ষাবর্ষের সবক উদ্বোধন

মা’হাদ প্রতিবেদন

গত ১৮ জুন ২০১৯ রোজ মঙ্গলবার মা’হাদের চলতি শিক্ষাবর্ষের সবক আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। মা’হাদের অন্যান্য উস্তাদের পাশাপাশি সে মজলিসে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান উপদেষ্টা, জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়ার স্বনামধন্য মুহাদ্দিস, মুফতী ইবরাহীম হাসান সাহেব দা.বা.। উপস্থিত ছিলেন জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়ার শাইখে সানী হযরত মাওলানা আবদুর রাজ্জাক সাহেব দা.বা.। আরো উপস্থিত ছিলেন, জামিআ রাহমানিয়া আরাবিয়ার মুহাদ্দিস মাওলানা আহমাদুল্লাহ সাহেব দা. বা.। মজলিসে প্রধান মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়ার মুহতামিম হযরতুল আল্লাম মাওলানা হিফযুর রহমান মুমিনপুরী হুযুর দা.বা.।

মজলিসের শুরুতে পবিত্র কালামে পাক থেকে তেলাওয়াতের পর মুফতী ইবরাহীম হাসান সাহেব তাঁর আলোচনায় বলেন, ‘লালবাগের প্রসিদ্ধ উস্তাদ মাওলানা সালাহুদ্দীন সাহেব দা.বা. প্রত্যেক বছরের শুরুতে থানবী রহ. এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলতেন, ছাত্রদের জন্যে তিনটি কাজ বাধ্যতামূলক.ভালোভাবে মুতালাআ করা, .মনোযোগ দিয়ে সবক শোনা .তাকরার করা। এগুলোর সাথে সালাহুদ্দীন সাহেব আরেকটি বাড়িয়ে বলতেন, প্রত্যেক ছাত্রের কর্তব্য হচ্ছে, নিজের সারা দিনের আমলসমূহের একটি নেযামুল আওকাত তথা রুটিন তৈরি করা।’

মুফতী ইবরাহীম হাসান সাহেব দা.বা.আরো বলেন,‘এখন তোমাদের সামনে  সময় এবং উপকরণ দুটোই উপস্থিত। সুতরাং এ সময়টাকে গনিমত মনে করে কাজে লাগাও। কিছুদিনের মধ্যেই তোমরা অনেকে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করবে। তখন তোমরা ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও সময় কিংবা উপকরণের অভাবে গভীর অধ্যয়ন করতে পারবে না।’

মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক সাহেব দা.বা. তাঁর আলোচনায় বলেন, ‘দুনিয়ার কেউ একথা নিশ্চতভাবে বলতে পারবে না যে, তার ব্যাপারে আল্লাহর ফায়সালা কী? কিন্তু তালেবে ইলমের ব্যাপারে একথা নিশ্চিতভাবে বলা যায়, তার ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা কল্যাণের ফায়সালা করেছেন। কারণ, হাদীস শরীফে ইরশাদ হচ্ছে, আল্লাহ তা‘আলা যার ব্যাপারে কল্যাণ চান তাকেই দীনের গভীর জ্ঞান দান করেন।’

মজলিসের প্রধান মেহমান মাওলানা হিফযুর রহমান মুমিনপুরী হুযুর সবক উদ্বোধন প্রাক্কালে তাঁর আলোচনায় বলেন,‘হারদুঈর হযরত রহ. বলতেন, পৃথিবীতে চার প্রকার লোক আছে। ১.খারাপ মানুষ। ২.সবচেয়ে খারাপ মানুষ। ৩.ভালো মানুষ। ৪.সবচেয়ে ভালো মানুষ। এই চারপ্রকারের মধ্যে চতুর্থ প্রকারের অন্তর্ভুক্ত হলো, কুরআনের শিক্ষা অর্জনকারী ও শিক্ষাদানকারী।’

তিনি আরো বলেন ‘সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষের দলে থাকতে হলে আমাদেরকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। শামসুল হক ফরীদপুরী রহ. একবার গওহরডাঙ্গা মাদরাসার দফতরে বসা ছিলেন। সামনে সরিষার ক্ষেত দেখা যাচ্ছিলো। পুরো ক্ষেতে সরিষা ফুল ফুটে চমৎকার এক দৃশ্যের অবতারণা হয়েছিলো। সদর সাহেব রহ. উপস্থিত উলামায়ে কেরামকে বললেন, এই চমৎকার দৃশ্য আমাদের সামনে তখনই এসেছে যখন এর পেছনে কিছু বীজ মাটির সাথে নিজেদের বিলীন করে দিয়েছে এবং আমাদের আনন্দিত করার ব্যবস্থা করেছে। আমরাও যদি এজগতের বুকে কোন অবদান রাখতে চাই,পৃথিবীবাসীকে আনন্দিত করতে চাই, তাহলে এমনিভাবে নিজেদেরকে বিলীন করে দিতে হবে।’ মূল্যবান এ আলোচনার পর মুমিনপুরী হুযুর সকল বিভাগের ছাত্রদের প্রথম সবক শুনে আনুষ্ঠানিকভাবে সবক ইফতিতাহ করে দেন। এরপর তাঁর দুআর মাধ্যমেই মজলিসের পরিসমাপ্তি ঘটে।

পোস্টটি লাইক ও শেয়ার করুন।