মোনস্তির বড় মসজিদ, মোনস্তির, তিউনিসিয়া (তিউনিসিয়া মোনস্তির শহরের উপকণ্ঠে সমুদ্রের কোর ঘেঁষে মসজিদটি অবস্থিত। ৯ম শতাব্দীতে মসজিদটি নির্মিত হয়।)
খেলাফতে আব্বাসিয়া (১৩২-৬৫৬ হিজরী, ৭৫০-১২৫৮ খ্রিস্টাব্দ)
মহানবী এর চাচা আব্বাস রাযি. এর বংশধরদের হাতে ৭৫০ খ্রিস্টাব্দে ইসলামের তৃতীয় এ খেলাফত প্রতিষ্ঠিত হয়। ৩৭ জন আব্বাসীয় খলিফা সুদীর্ঘ ৫০৮ বছর মুসলিম বিশ্ব শাসন করেন। আবুল আব্বাস আস-সাফফাহর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত এ সাম্রাজ্য আবূ জাফর আল মানসূর, হারুনুর রশীদ এবং আল মামুনের মতো কালজয়ী শাসকদের নেতৃত্বে এক গৌরবান্বিত ইতিহাস সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়।
সর্বমোট ৩৭ জন আব্বাসী খলিফা দীর্ঘ ৫০৮ বছর (হিজরী সন হিসেবে ৫২৪ বছর) কাস্পিয়ান সাগর থেকে নীল নদ এবং আটলান্টিক মহাসাগর থেকে সিন্ধু নদ পর্যন্ত বিস্তৃত এ সাম্রাজ্য পরিচালনা করেন ।
প্রথমে তারা কুফায় রাজধানী স্থাপন করলেও ৭৬২ খ্রিস্টাব্দে তা স্থানান্তর করেন বাগদাদে। বাগদাদে বাইতুল হিকমাহ স্থাপন এবং আব্বাসীয় শাসকদের জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতি বিশেষ মনোযোগের কারণে মুসলিম বিশ্ব দর্শন, বিজ্ঞান, চিকিৎসা, শিল্প-সাহিত্য চর্চার প্রধান কেন্দ্র হয়ে উঠে। এ সময়ে গণিত, আলকেমি, জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং আলোকবিজ্ঞানসহ প্রতিটি সেক্টরে মুসলিম বিজ্ঞানীরা সাফল্যের সর্বোচ্চ শিখরে আরোহণ করেন। উমাইয়া খলিফাগণ যে বিপুল উদ্যমে রাজ্য জয়ের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত ছিলেন, আব্বাসীয় যুগে সেই উদ্যম ব্যয় হয় জ্ঞান-বিজ্ঞান আর সভ্যতা চর্চায়।
১২৫৮ সালে মোঙ্গল নেতা হালাকু খানের বাগদাদ দখলের মাধ্যমে বিলুপ্তি ঘটে ঐতিহ্যবাহী আব্বাসীয় খেলাফতের। হালাকু খান ১২৫৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি শেষ আব্বাসীয় খলিফা আল মুসতা’সিমবিল্লাহকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এরপরও মামলুকদের অধীনে মিসরের কায়রোকেন্দ্রিক আব্বাসী খলীফাগণ নামে মাত্র হলেও খেলাফতের পদে আরো অনেক বছর সমাসীন থাকেন।
