মুসলিম শাসন আমল-১

মসজিদে নববী মদীনা মুনাওয়ারা হিজরতের প্রথম বছর আল্লাহর প্রিয় হাবীব হযরত মুহাম্মাদ ﷺ মসজিদটি নির্মাণ করেন। তখন এই মসজিদই হয়ে উঠে ইলম, ইবাদত, দাওয়াত, জিহাদ, শাসনব্যবস্থা ও সমাজ বিনির্মাণের মূল মারকায।

খেলাফতে রাশেদা (১১-৪০ হিজরী, ৬৩২-৬৬১ খ্রিস্টাব্দ)

নবীজী ﷺ মদীনায় আল্লাহর বিধান অনুসারে পূর্ণ দশ বছর রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। তাঁর শাসনে ন্যায়, দয়া, ইহসান ও আল্লাহভীতি ছিল সর্বোচ্চ মর্যাদার প্রতীক। নবী  এর যুগে ইয়ামান, বাহরাইন, ওমান, নাজরানসহ আরবের বহু অঞ্চল ইসলামের অধীনে আসে। তাঁর রেখে যাওয়া এই নূরানী দ্বীন খুলাফায়ে রাশেদীনের হাতে আরও দূর-দূরান্ত অবধি বিস্তার লাভ করে।

নবী করিম ﷺ এর ইন্তেকালের পর খেলাফতের দায়িত্ব গ্রহণ করেন খুলাফায়ে রাশেদীন। হযরত আবু বকর রাযি. শাসন করেন ২ বছর ৩ মাস। এ সময় তিনি সততা ও দৃঢ়তার সাথে উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ করেন এবং কঠোর হস্তে বহু ফিতনা দমন করেন।  

হযরত উমর রাযি. ১০ বছর ৬ মাস ন্যায়বিচারের অনুপম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। তাঁর শাসনামলে ইরাক, শাম, মিসর, পারস্যের বিস্তীর্ণ ভূমি, ফিলিস্তিন এবং জেরুজালেমসহ বহু অঞ্চলে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠিত হয়। ইসলামের অমিয় বাণী আরব সীমানা ছাড়িয়ে ভারত, চীনেও পৌঁছে যায়।

হযরত উসমান রাযি. ১২ বছর শাসন করেন। তিনি ইসলামী প্রশাসন সুসংহত করেন এবং কুরআন মাজিদকে একক মুসহাফ আকারে সংরক্ষণ করেন। তাঁর আমলে ইসলাম উত্তর আফ্রিকা, আর্মেনিয়া, আজারবাইজানসহ আরো বিভিন্ন অঞ্চলে প্রসারিত হয়।

হযরত আলী রাযি. প্রায় ৫ বছর জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও সাহসিকতার সাথে উম্মাহকে নেতৃত্ব দেন। হযরত হাসান ৬ মাস খেলাফত পরিচালনা করে মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও ঐক্যের জন্য স্বেচ্ছায় ক্ষমতা হস্তান্তর করে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।

ইসলামী খেলাফতের এই  যুগটি ছিল ইসলামী সভ্যতার জন্য এক আলোকময় অধ্যায়। এই সময়ে ইসলামের আলো সমাজের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে এবং মুসলিম উম্মাহর জন্য নৈতিক, আধ্যাত্মিক ও রাজনৈতিক ভিত্তি স্থাপিত হয়। আল্লাহর একত্ববাদ দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। শিরক, কুসংস্কার ও জাহেলিয়াতের প্রভাব বিদূরিত হয়, যা মানুষের মন ও সমাজকে তাওহীদ ও আল্লাহভীতিতে পূর্ণ করে দেয়।

পোস্টটি লাইক ও শেয়ার করুন।

একটি মন্তব্য লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *