আব্দুল মতীন, দ্বিতীয় বর্ষ
৩রা জুন ২০১৩ খ্রি.
১৪৩২ হিজরীর রমাযান মাস। মা’হাদুল বুহুসিল ইসলামিয়া সম্পর্কে তথ্য জানার জন্য নূরজাহান রোডস্থ আবাহন অফিসে উপস্থিত হলাম। আবাহনের এম.ডি. মাসউদ ভাই সেখানে আমাদেরকে অভ্যর্থনা জানালেন। অপরিচিত হওয়া সত্ত্বেও এমন অমায়িক ব্যবহার করলেন যে, আমি ভাবতে লাগলাম, যে প্রতিষ্ঠানের স্বপ্নদ্রষ্টা মাসউদ ভাইদের মতো লোকেরা হবেন তা কখনো সাধারণ দশটি প্রতিষ্ঠানের মতো হবে না। তিনি আমাদের সামনে মা’হাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য তুলে ধরলেন। অতঃপর নিজ আগ্রহে আমাদেরকে নিয়ে উপস্থিত হলেন মা’হাদ প্রাঙ্গনে। শহরের কোলাহল ও বিদঘুটে আওয়াজ মুক্ত পরিবেশে মা’হাদের অবস্থান। চারপাশে শুভ্র কোমল কাশফুলের সমাহার যেন মা’হাদের স্বপ্নদ্রষ্টাদের অন্তরের শুভ্রতা ও কোমলতার জানান দিচ্ছিল। দখিনা বাতাসে দোল খেয়ে যে কাশফুলগুলো তাদের প্রতিবেশী হওয়ার আমন্ত্রণ জানাচ্ছিল। মুদীর সাহেব দা.বা. এর সাথে সাক্ষাত করলাম। প্রথম সাক্ষাতেই তিনি এমন সৌহার্দ্যপূর্ণ ব্যবহার করলেন যে, আমি নিশ্চিত হলাম, কাশফুলের চেয়ে হুযূরের হৃদয় নরম ও কোমল। এমন মহৎ হৃদয়ের অধিকারীদের থেকেই অনেক কিছু আশা করা যায়। তাই অনর্থক কালক্ষেপণ না করে মা’হাদের প্রথম ছাত্র হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করলাম।
এরপর…
দু’বার নরম কাশফুল শক্ত দানায় পরিণত হয়ে ঝরে পড়ে গেল। চোখের সামনে প্রায় ২২টি চাঁদ হেলাল থেকে বদর হয়ে লীন হয়ে গেল। শুধু লীন হয়নি আসাতিযায়ে কেরাম ও মা’হাদের স্বপ্নদ্রষ্টাদের হৃদয়ের কোমলতা, মায়া-মমতা ও অবিরাম সহযোগিতা ও অনুপ্রেরণা। বিনিময়ে তারা আমার থেকে কিছুই পাননি। কিন্তু পেয়েছেন অবাধ্যতা ও অকৃতজ্ঞতা। বিদায়ের এ সন্ধিক্ষণে এসব স্মৃতি হৃদয়কে দুমড়ে মুচড়ে দিচ্ছে। লজ্জা ও অনুশোচনা কেড়ে নিয়েছে মুখের ক্ষমা চাওয়ার ভাষা। তবুও তাদের সমীপে এতটুকু আরজ করতে চাই-
জানি এ ঋণ শোধ হবে না, আজীবন কাঁধে রবে,
নববী ইলম স্বর্গীয় ঋণ, শোধ নেই তার ভবে।
তাইতো আল্লাহ তা‘আলার কাছে বলি- হে আল্লাহ! তুমি তোমার শান মোতাবেক তাদের প্রতিদান দাও। তাদের কোমল পরশের ছায়া আরো দীর্ঘায়িত করো। আমীন॥