ঈমান বিধ্বংসী আকীদা-বিশ্বাস

প্রশ্ন : ঈমান বিধ্বংসী আকীদা-বিশ্বাস ও আমলগুলো কি কি বিস্তারিত জানতে চাই?

উত্তর : ঈমান বিধ্বংসী আকীদা-বিশ্বাস ও কার্যক্রমগুলো নি¤েœ তুলে ধরা হলো।

১. হযরত আবু বকর ও উমর রা. কে বকা দেয়া।

২. আল্লাহর দীদার তথা সাক্ষাৎকে অসম্ভব মনে করা।

৩. আল্লাহ তা‘আলাকে সৃষ্টির ন্যায় শরীর, হাত, পা, এবং চেহারা বিশিষ্ট মনে করা।

৪. অজ্ঞতাবসত ও স্বেচ্ছায় কুফুরী শব্দ উচ্চারণ করা।

৫. কাফের হয়ে যাওয়ার সংকল্প করা।

৬. অকাট্য হারামকে হালাল এবং অকাট্য হালালকে হারাম মনে করা।

৭. ‘আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করি না’ বলে দম্ভোক্তি করা।

৮. ‘সে যদি খোদাও হয় তবুও আমি তার থেকে আমার অধিকার আদায় করে ছাড়বো।’ এ জাতীয় কথা বার্তা বলা।

৯. ‘স্বয়ং আল্লাহই তোর সাথে পারে না। আমি কি করে পারবো’ বলা।

১০. ‘আমার জন্য আকাশে আল্লাহ আর জমিনে তুমি’ বলা।

১১. কেউ মারা গেলে ‘আল্লাহ তার মুখাপেক্ষী ছিল কিংবা আল্লাহ এদের উপর জুলুম করেছে’ জাতীয় কথা বার্তা বলা।

১২. ‘আমি সওয়াব ও আযাবের প্রতি অসন্তুষ্ট ’ বলা।

১৩. সাক্ষী ছাড়া বিবাহ করে ‘আমি আল্লাহ ও তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অথবা ফেরেশতাকে সাক্ষী রেখে বিবাহ করেছি।’ বলা।

১৪. আল্লাহ ও তোমার পায়ের কসম বলে শপথ করা।

১৫. নবীদের ব্যাপারে অপমান ও অসম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার করা।

১৬. ‘যদি আদম আ. গন্দম না খেতেন তাহলে আমরা কেউ দুর্ভাগা হতাম না।’ জাতীয় কথা বার্তা বলা।

১৭. ‘সুন্নত কি কাজে আসবে?’ বলে দম্ভোক্তি করা।

১৮. নেক কাজ করাকে হাঙ্গামা বলে অভিহিত করা।

১৯. ‘এত নামায পড়ে কি পেয়েছো’ বলে নামাযের প্রতি তাচ্ছিল্য করা।

২০. ‘আমার কাছে আল্লাহর তুলনায় নারী জাতি অধিক প্রিয়’ বলা।

২১. ‘খেল তামাশার কারণে নামায রোজার সময় পাই না’ বলা।

২২. মদ জুয়া জিনা ব্যাভিচার হালাল হওয়ার আকাংখা করা।

২৩. যেসব বিষয়ের উপর ঈমান আনা আবশ্যক সেসব বিষয়ের কোনো একটিকেও অস্বীকার করা।

২৪. হারাম সম্পদ সদকা করে সওয়াবের নিয়ত করা।

২৫. শরীয়তের কোনো বিষয়কে অবজ্ঞা করা।

২৬. ‘অর্থ কড়ির দরকার; ইলম আমল কোনো কাজে আসবে না।’ বলা।

২৭. বিসমিল্লাহ বলে মদ পান বা জিনা ব্যাভিচারে লিপ্ত হওয়া।

২৮. আল্লাহ ব্যতীত অন্য কিছুর নামে পশু জবাই করা।

২৯. সত্যিকার আহলে সুন্নত ওয়াল জামা‘আতকে কাফের বলা।

৩০. কুরআন হাদীসের অকাট্ট দলীল দ্বারা প্রমাণিত কোনো বিষয় অস্বীকার করা।

৩১. শরীয়তের কোনো বিষয় নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রƒপ করা।

৩২. ইবাদত কিংবা সম্মানের উদ্দেশে কবর চুমা দেয়া।

৩৩. আল্লাহ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোনো নির্দেশকে খারাপ মনে করা এবং তাতে দোষ-ত্রুটি অন্বেষণ করা।

৩৪. ফেরেশতা সম্বন্ধে বিদ্বেষভাব পোষণ করা।

৩৫. কারো মৃত্যুতে আল্লাহর উপর অভিযোগ করা।

৩৬. সত্যপন্থী উলামায়ে কেরামকে দীনের ধারক বাহক হওয়ার দরুণ গালি দেয়া বা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা।

৩৭. প্রকাশ্যে পাপ করে তার জন্য গর্ববোধ করা।

৩৮. জনগণকে সকল ক্ষমতার উৎস মনে করা।

৩৯. গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ইত্যাদিকে মুক্তির পথ মনে করা।

৪০. ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ যদি হয়, কোনো ধর্মে না থাকা, কোনো ধর্মের পক্ষ অবলম্বন না করা, কোনো ধর্মকে সমর্থন দিতে না পারা তবে এটা কুফুরী মতাদর্শ।

৪১. ডারউইনের বিবর্তনবাদে বিশ্বাস করা।

৪২. ইসলামকে মসজিদ, মাদরাসা এবং ব্যক্তিগত জীবন ব্যবস্থার সাথে সীমাবদ্ধ মনে করা।

৪৩. ইসলামের মত হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীষ্টান প্রভৃতি ধর্মকে সত্য মনে করা।

৪৪. কোনো পীর বুযুর্গকে সর্বত্র উপস্থিত মনে করা।

৪৫. কোনো পীর বুযুর্গকে দূর দেশ থেকে আহ্বান করা। এবং তিনি শুনতে পান বলে বিশ্বাস করা।

৪৬. কোনো পীর বুযুর্গের মাযারে গিয়ে সন্তান কিংবা কোনো উদ্দেশ্য কামনা করা।

৪৭. কোনো পীর বুযুর্গের নাম ওয়াজিফার মত জপ করা।

৪৮. কোনো পীর বুযুর্গের নামে শিরনী, ছদকা বা মান্নত করা।

৪৯. কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর নামে দোহাই দেয়া বা শপথ করা।

৫০. নক্ষত্রের প্রভাব বিশ্বাস করা বা তিথি পালন করা।

৫১. জ্যোতির্বিদ, গণক বা ঠাকুরের নিকট হাত দেখিয়ে অদৃষ্ট সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা।

৫২. কোনো জিনিস দেখে কু লক্ষণ বা কু যাত্রা মনে করা।

৫৩. কোনো দিন বা মাসকে অশুভ মনে করা।

৫৪. কোনো পীর বুযুর্গকে লাভ লোকসানের মালিক মনে করা।

৫৫. কোনো পীর বুযুর্গের বাড়ি বা দরগাহকে কা‘বা শরীফের মত আদব সম্মান করা।

৫৬. কোনো পীর বুযুর্গের নামে নাক, কান ছিদ্র করা, আংটি পরিধান করা, চুল রাখা বা টিকি রাখা।

৫৭. ব্যারাম-পীড়ার ছুত লাগাকে বিশ্বাস করা।

৫৮. যাত্রা মুখে হাঁচি দেয়াকে কু যাত্রা মনে করা।

৫৯. তেমাথা পথে ভেট দেয়া।

বি. দ্র. উপরে যেসব বিষয়কে কুফুরী বা শিরক বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে তা কারো মাঝে পরিলক্ষিত হলেই তাকে কাফের বা মুশরিক বলে আখ্যায়িত করা যাবে না। কারণ কুফুর শিরকের মাঝে স্তরভিন্নতা রয়েছে। যদিও সব স্তরের কুফর ও শিরক ভ্রষ্টতা এবং যার মাঝে এগুলো বিদ্যমান তাকে আহলে সুন্নত ওয়াল জামা‘আত থেকে বহির্ভূত বলে গণ্য করা হবে। তবুও কুফর শিরকের কোন স্তর কার মাঝে পাওয়া গেলে তাকে কাফের মুশরিক বলা যাবে তা বিজ্ঞ উলামা ও মুফতীগণই নির্ণয় করতে পারবেন। এ ব্যাপারে সাধারণ মানুষের জন্য কোনো সিদ্ধান্ত দেয়া জায়েয নেই। তাই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তের প্রয়োজন হলে বিজ্ঞ মুফতিয়ানে কেরামের শরণাপন্ন হবে।

– সূরা শূরা ১১, সূরা কিয়ামাহ ২২,২৩, সহীহ বুখারী হাদীস ১০৭, ৫৫৪, সহীহ মুসলিম ৬৩৩, রদদুল মুহতার ২/৪, ১৫০, ৪/৪৬৩, ৪৬৬, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/২৭৯, ৫/৩৪৯, ফাতাওয়া হাক্কানিয়া ১/১৪১, ১৪৬, ১৮৩, ১৮৫, ১৮৬, ১৮৯, ১৯২, ১৯৩, ১৯৬, ২৬৮ কেফায়াতুল মুফতী ১/৩২, ফাতাওয়া মাহমুদিয়া ২/১০৬, ১০৮, ২০১, নিযামুল ফাতাওয়া ১/১৩৯, ১৮৯, আহসানুল ফাতাওয়া ১/৩৬, ৮/১১৩, ১৯২, ফাতাওয়া উসমানী ১/৮৪, ফাতাওয়া আব্দুল হাই লাক্ষèবী ৩৪, ফাতাওয়া রশীদিয়া ২/২৬৬, মালাবুদ্দা মিনহু ১২৯, বেহেস্তী জিওর ১/ ৪০, ৪১।

পোস্টটি লাইক ও শেয়ার করুন।

একটি মন্তব্য লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *