পরিচয়
এক. পৃথিবী মানুষের স্থায়ী ঠিকানা নয়। পরকালের পরম সুখের জান্নাতই হল মুমিনের চিরস্থায়ী ঠিকানা। ঐ অনিঃশেষ জীবনের পাথেয় সংগ্রহের জন্যই এই দুনিয়ার জীবন। আর আখেরাতের পাথেয় সংগ্রহের পথ নির্দেশ করার জন্যই আল্লাহ তা‘আলা যুগে যুগে প্রেরণ করেছেন বহু সংখ্যক নবী-রাসূল (আ.)। নাযিল করেছেন আসমানী গ্রন্থসমূহ। এ ধারাবাহিকতায় সবশেষে সর্বশ্রেষ্ঠ নবী রাসূলে আরাবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শুভাগমন হলো। আরবের ধুসর মরুর বুক চিরে উৎসারিত হলো আবে হেদায়েতের নির্মল ঝর্ণাধারা। ফারান গিরি শিখরে আখেরি নবীর উপর সর্বপ্রথম নাযিল হলো ‘পড় তোমার প্রভুর নামে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন’। (সূরা আলাক, আয়াত-১)। ‘পড়’ দিয়ে শুরু হলো সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানী গ্রন্থ আল কুরআন। সুতরাং ইলম অর্জনের নির্দেশই হলো নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর মহান রব্বুল আলামীনের প্রথম নির্দেশ।
কেননা কোন মানুষ আসমানী ইলম ব্যতীত কোনভাবেই একথা জানতে পারে না যে তার প্রকৃত সফলতা কোন পথে। তাইতো নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইলমে দীন শেখাকে প্রত্যেকের জন্য অপরিহার্য করে ইরশাদ করেছেন ‘ইলমে দীন শিক্ষা করা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য ফরয’। (ইবনে মাজাহ, হা.নং ২২৪)। এছাড়াও প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণনা করেছেন ইলমের অসংখ্য ফযীলত। যেমন, যে ব্যক্তি ইলম শিক্ষা করার জন্য কোন পথ অবলম্বন করলো, আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য জান্নাতের রাস্তাকে সহজ করে দেবেন। (সহীহ মুসলিম, হা.নং ২৬৯৯)। আর বাস্তবেও নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে ইলম শিক্ষা দিয়েছেন। মদীনার মসজিদে নববীতে কায়েম করেছেন সুফ্ফা নামক মাদরাসা। আজকের পৃথিবির সকল কওমী মাদরাসা সেই সুফফারই শাখা প্রশাখা। এ মাদরাসাগুলো মহান রব্বুল আলামীনের পক্ষ থেকে উম্মতের জন্য অনন্য রহমত।
নিঝুম রাতের শেষ প্রহরে গোটা পৃথিবী যখন ঘুমিয়ে থাকে তখনও এ মাদরাসাগুলোতে মানবতার কল্যাণ কামনায় বিনীত দু‘আয় উলামা তলাবাগণের নয়ন হতে অশ্রু ঝরে। যেখানে শেষ রাতে নিষ্পাপ শিশু কিশোরেরাও কচি হাত তুলে আল্লাহ তা‘আলার দরবারে দু‘আ করে। এ মাদরাসাগুলোর মাধ্যমেই উলূমে নববীর নির্মল ঝর্ণাধারা নির্ঝরিত হয়ে মানবতার ফসলভূমিকে সিক্ত ও সজিব রাখে। দাওয়াত, তা’লীম, তাযকিয়াসহ নববী মেহনতের প্রাণ কেন্দ্র এ মাদরাসাগুলো। বাতিলের সর্বগ্রাসী আগ্রাসনের মোকাবিলায় এ মাদরাসাগুলোর সন্তান উলামায়ে কেরামই সাদ্দে-সেকান্দারীর ন্যায় বাধার প্রাচীর দাঁড় করিয়ে দেয়। সুতরাং মুসলিম উম্মাহর দীন, ঈমান ও অস্তিত্ব রক্ষায় প্রতিটি কওমী মাদরাসা এক একটি দুর্ভেদ্য দুর্গ। এই মাদরাসাগুলোকে টিকিয়ে রাখা এবং আরো মাদরাসা প্রতিষ্ঠায় সাধ্যানুযায়ী সহযোগিতা করা প্রত্যেক মুসলিমের ঈমানী দায়িত্ব।
দুই. প্রয়োজন পরিমাণ দীনী ইলম শিক্ষা করা প্রত্যেক মুসলিমের উপর ফরযে আইন। আর অভিজ্ঞ মুফতী হওয়া ফরযে কেফায়া। কোন এলাকায় যদি তাদের মাসআলা মাসাইলের সমাধান দিতে পারে এমন কোন মুফতী না থাকে তাহলে সবাই ফরয তরকের গুনাহগার হবে। সুতরাং আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলার সকল মানুষকে এ ফরয তরকের গুনাহ থেকে বাঁচানোর জন্য বিপুল সংখ্যক প্রাজ্ঞ মুফতীর প্রয়োজন। যে প্রয়োজন পূরণে ইতোমধ্যেই বাংলার যমীনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বেশ কয়েকটি গুণগত মানসম্পন্ন উচ্চতর গবেষণা প্রতিষ্ঠান। মা’হাদুল বুহুসিল ইসলামিয়া সে প্রতিষ্ঠানগুলোরই অন্যতম একটি। দেশবরেণ্য মুফতীগণের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ১৪৩২ হিজরিতে (১৪১৭ বঙ্গাব্দ, ২০১১ খ্রিস্টাব্দ) প্রতিষ্ঠিত হয় এই উচ্চতর দীনী প্রতিষ্ঠানটি। আলহামদুলিল্লাহ! মা’হাদ তার লক্ষ্য বাস্তবায়নে এগিয়ে চলছে। সফলতার সাথে আজ তা দশম বর্ষ অতিক্রম করছে।
আমাদের প্রত্যয়
১. এমন এক কাফেলা তৈরি করা যারা হবে-
কুরআন-হাদীস ও ইসলামী ফিকহে প্রাজ্ঞ
ব্যাংকিং, ক্যাপিটাল মার্কেট এবং আধুনিক মাসআলা মাসাইলের জ্ঞান সমৃদ্ধ
আরবী, বাংলা এবং ইংরেজি ভাষায় দক্ষ
ইখলাস ও দরদের সাথে দীন প্রচার প্রসারে সমর্পিত
২. শক্তিশালী ইসলামিক প্রচার মিডিয়া গড়ে তোলা
৩. ইসলামী সুষম অর্থনীতি সমাজ প্রতিষ্ঠা করা
৪. জনসাধারণের দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় ইসলামিক প্রশ্নাবলীর উত্তর প্রদান করা
আমাদের প্রচেষ্টা
১. অভিজ্ঞ উলামায়ে কেরামের নিবিড় তত্ত্বাবধান।
২. উস্তাদদের সার্বক্ষণিক উপস্থিতি ও পর্যবেক্ষণ।
৩. দেশের বিদগ্ধ ও প্রথিতযশা মুফতিয়ানে কিরামের অধীনে পরিচালিত তাখাসসুস সমূহের নিসাবের সমন্বয় সাধন।
৪. উদ্ভূত আধুনিক মাসআলা মাসাইল পর্যালোচনা বিষয়ে সবিশেষ গুরুত্বারোপ করা।
৫. দেশের শীর্ষস্থানীয় মুফতিয়ানে কিরামের মাধ্যমে প্রতি মাসে ফিকহী মুহাযারার আয়োজন করা।
৬. সমসাময়িক গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ের উপর গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ লেখা।
৭. উদ্ভূত বিভিন্ন অবাঞ্ছিত বিবাদ বিসম্বাদ নিরসনে প্রতিটি ছাত্রকে সুগভীর গবেষক মনোভাবাপন্ন ও তাত্ত্বিক মানসিকতাসম্পন্ন করে গড়ে তোলা।
৮. দীনি প্রচার প্রসারকে আরো গতিময় ও যুগোপযোগী করে তোলার নিমিত্ত সর্ব বিষয়ে সম্যক ধারণা সৃষ্টির ব্যাপারে সবিশেষ গুরুত্বারোপ করা।
৯. অভিজ্ঞ শিক্ষকের মাধ্যমে আরবি, বাংলা ও ইংরেজি ভাষা বিষয়ে পারদর্শী করে তোলা।
১০. ইসলামী অর্থনীতির আধুনিক রূপায়ন কল্পে ব্যাংকসহ আধুনিক অর্থনীতির অন্যান্য আবশ্যিক বিষয়ে পারদর্শী ব্যক্তি দ্বারা শিক্ষা প্রদান করা।
১১. উস্তাদদের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে দীনি গবেষণার জন্য সহায়ক পরিমাণ কম্পিউটার ও নেট ব্যবহার শিক্ষা দান করা।
১২. দীনি মারকাযগুলোর সাথে গভীর সেতুবন্ধ এবং বড় বড় উলামায়ে কেরাম থেকে আত্মিক ও জ্ঞানিক আহার লাভের উদ্দেশ্যে বছরে একবার ইলমী সফরের ব্যবস্থা করা।
মা’হাদের চলমান আয়োজন
আত্তাখাস্সুস ফিলফিকহি ওয়াল ইফতা কোর্স
মাওলানা কোর্সের সমাপণী পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ আলেমগণই এ কোর্সের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেন। ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণদেরকে দুই বছর পূর্ণ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নির্ভুল ফতওয়া প্রদানের যোগ্যতা সম্পন্ন করে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়।
ফাতাওয়া বিভাগ
এই বিভাগ থেকে জনসাধরণের দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় ইসলামিক প্রশ্নের লিখিত উত্তর প্রদান করা হয়। সরাসরি, ডাক মারফত ও ই-মেইল যোগে মা’হাদ এ সেবা প্রদান করে থাকে। ই-মেইল ঠিকানা হল: mbuhus@gmail.com
দারুত তাসনীফ (গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগ)
এ বিভাগের অধীনে বস্তুনিষ্ঠ ও গবেষণাধর্মী সাময়িকী ও আপামর জনসাধারণের জন্য উপকারী ও সময়োপযোগী দীনি বিষয় সংবলিত বিভিন্ন প্রচারপত্র প্রকাশ করা হয়। এ যাবৎ এ বিভাগ থেকে ‘বাতায়ন’ নামে সাময়িকী প্রকাশিত হয়ে বিদগ্ধজনের কাছ থেকে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। এর দশম সংখ্যাটি প্রকাশ হয়েছে। এ বিভাগের আরো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনা হলো, ছোটদের ‘নবীজীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) গল্প শোনো’, ‘সুন্নাহ সম্মত দু‘আ ও যিকির’, ‘ঈমানের বুনিয়াদী শিক্ষা’ ও ‘তারাবীহ নামাযের রাকাআত সংখ্যা’। প্রকাশনাগুলো জনমনে সমাদৃত হয়েছে।
কিতাব বিভাগ (সানাবী আউয়াল তথা জামআতে শরহেজামী পর্যন্ত)
তাহফীযুল কুরআন বিভাগ
নাযেরা বিভাগ
নূরানী মকতব বিভাগ
স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের জন্য দীনিয়্যাত বিভাগ
ইংরেজি শিক্ষিত ও বয়স্কদের জন্য ‘ফরযে আইন কোর্স’
একটি বিশেষ আবেদন
শুভাকাঙ্ক্ষী ও শুভার্থীদের নেক দু‘আয় আল্লাহ তা‘আলার রহমতে মা‘হাদের প্রয়োজনগুলো একে একে পূরণ হয়ে চলেছে, আলহামদুলিল্লাহ। স্থায়ীভাবে দীনি খিদমত আঞ্জাম দেয়ার জন্য মা’হাদের বড় প্রয়োজন এক খণ্ড নিজস্ব জমির।
মা’হাদের পরিকল্পনাধীন দীনি খিদমতগুলো আঞ্জাম দেয়ার জন্য একটি স্থায়ী জমির প্রয়োজন। এ জমি ক্রয়ে যে বিশাল অঙ্কের অর্থের প্রয়োজন তা পূরণে আমরা আন্তরিক দু‘আ ও সহায়তার মাধ্যমে আপনার স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণ কামনা করছি। আশা করি এর মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ পালন করা হবে এবং মৃত্যু পরবর্তী অনিঃশেষ জীবনে উত্তম বিনিময় অর্জিত হবে। কেননা, আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন, তোমরা কল্যাণ ও তাকওয়ার ব্যাপারে একে অপরকে সাহায্য কর। (সূরা মায়িদা আয়াত- ২)
হাদীসে কুদসিতে এসেছে, হে আদম সন্তান! তুমি দান কর তোমাকে দান করা হবে। (সহীহুল বুখারী, হা.নং ৫৩৫২)। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সবাইকে সদকায়ে জারিয়ার এই মহান কাজে এখলাসের সাথে শরিক থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন ॥ -পরিচালক
প্রধান মুফতী
হযরতুল আল্লাম মুফতী ইবরাহীম হাসান সাহেব দা.বা.
ইমাম ও খতীব, বাইতুল মুয়াজ্জম জামে মসজিদ, মুহাম্মাদপুর, ঢাকা।
মুহাদ্দিস, জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়া, মুহাম্মাদপুর, ঢাকা।
পরিচালক
মুফতী মাহমূদুল আমীন
সিনিয়র শিক্ষক, জামি‘আ ইসলামিয়া চরওয়াশপুর, হাজারীবাগ, ঢাকা।
খতীব, আজিমপুর সরকারি কলোনি (পার্টি হাউজ) জামে মসজিদ, আজিমপুর, ঢাকা।
ই-মেইল: mahmudulamin6@gmail.com
আপনার ইসলামী প্রশ্নের উত্তর পেতে যোগাযোগ করুন এই ঠিকানায় : http://mahadbd.com/
মোবাইল : ০১৮১১২২৮৯৯২, ০১৭৬২৮৫২৪৮৩
ঠিকানা
মা’হাদুল বুহুসিল ইসলামিয়া
আল-মদিনা জামে মসজিদ কমপ্লেক্স
প্লট-০২, রোড-০৮, ব্লক-এফ,
বসিলা গার্ডেন সিটি, মুহাম্মাদপুর, ঢাকা-১২০৭।
ব্যাংক এ্যাকাউন্ট
MAHADUL BUHUSIL ISLAMIA
Al-Arafah Islami Bank
Branch: Atibaza
A/C No:
0831020002658 (Generel Fund)
0831220000197 (Lillah Fund)