নীল সাগরের তীরে (৩)

মুফতি হাফিজুর রহমান


নাস্তিকতার মৃদু প্যাঁচাল

দু’ চোখ মেলে দেখছি সবুজ বাংলার মায়াবী ছবি। আর দৌড়ে চলছি। পথের দুধার জুড়ে দেখি, গাছ গাছের পাতা গাছের ডালা খাল খালের পানি পুকুর পুকুরের মাছ সাতার কাটতে থাকা হাস ঘর ঘরের পিড়ি উঠোন উঠোনে বাঁধা ছাগল গোয়াল ঘর গোয়াল ঘরের গরু উঠোনে রোদ দেয়া কাপড় সব দৌড়াচ্ছে। পা নেই। তবুও দৌড়ায়। দৌড়ায় গ্রাম। দৌড়ায় মানুষ। দৌড়ায় সব কিছু। সামনে তাকিয়ে দেখি, না শুধু আমরাই দৌড়াচ্ছি। আমাদের সবার দুটো করে পা। একটিও নড়ছে না। সামনেও না পেছনেও না। নিথর পড়ে আছে পাগুলো। আমরা সবাই কাছাকাছি। হাত বাড়িয়ে ছুঁতে পারি একজন আরেকজনকে। কেউ কারো থেকে সরে যাচ্ছি না। তবুও আমরা দৌড়াই। গ্রাম আমাদের ছেড়ে আমরা গ্রাম ছেড়ে। আমরা দেখি, ভাল করে দেখি আমাদের পাশের গ্রামগুলো দৌড়াচ্ছে। আসলে কি গ্রামগুলো দৌড়ায়? নাকি আমরা দৌড়াই। দুচোখে দেখি গ্রাম দৌড়ায়। তবে কি চোখের দেখাই সত্য? নাকি চোখের আড়ালে অন্য কিছু সত্য। আমরা দেখি পৃথিবী ঘোরে না। অনুভব করি পৃথিবী ঘোরে না। কানে শুনি না পৃথিবী ঘোরার ভন ভন শব্দ। পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের কোন একটি দিয়েও উপলব্ধি করতে পারি না পৃথিবী ঘোরে। আমরা দেখি নি ছায়াপথ ঘোরে। দেখি নি পৃথিবী ঘোরে। যেমন দেখে নি বিজ্ঞানের মেধাবী ছেলেটি। তবু স্বীকার করি পৃথিবী ঘোরে। যেমন স্বীকার করে বিজ্ঞান অনুষদের ওই ছেলেটাও। বিজ্ঞানীরা বলেছে বলে। তারা সত্য বলেছে না মিথ্যা বলেছে বিচার করি নি। শুধু স্বীকার করি পৃথিবী ঘোরে। সূর্য ঘোরে। ঘুরে ছায়াপথ। বিস্তৃত হচ্ছে পুরো মহাজগত। সুদীর্ঘ হচ্ছে তার সীমানা পরিধি। হতে থাকবে নিলয়াবধি।

তবুও কি বলবেন নাসরিন আপু ! যা দেখব তাই মানব? যা দেখব না তা মানব না। আল্লাহ দেখি না। তাই মানি না। মানব না। ধর্মটর্ম সব শুনা কথা। পুরাণ কথা। এসব নিয়ে বুঁদ হয়ে থাকা অর্থহীন উন্মাদনা।…আপু ! আপনি দেখেন নি পৃথিবী ঘোরে। গ্লাস সাটানো ঐ যান্ত্রিক বক্সটাতে হয়তো দেখেছেন পৃথিবী ঘুরে। বিজ্ঞান নখ উচিয়ে দেখিয়েছেন এটা পৃথিবী। তাই এটা পৃথিবী। বিজ্ঞান না বললে ওটা আপনার পৃথিবী হত না। আপনি চোখে না দেখে শুধু দূরদর্শনে চেয়ে কিংবা মানুষের মুখে শুনে বিশ্বাস করেছেন পৃথিবী ঘুরে। আর আমরা না দেখে বলি পৃথিবী ঘুরায়। আমরা আপনার কলমে যে অভিধা পাই আপনি কি আমাদের কলমে সে অভিধা পাবেন না? আপনি কি স্বীকার করেন মানুষের জ্ঞান সীমিত? এক আধটু মেধা থাকলে স্বীকার করবেন। বিজ্ঞানী নিউটন জ্ঞান সমুদ্রের পাড়ে বসে ধূলো বালুতে খেলা করেই তার সময় শেষ করেছেন। আর আপনি? তার পায়ের ধূলো কণার মতও কি হবেন? তবে স্বীকার না করে উপায় কি? হৃদয়ের সবটুকু মমতা ঢেলে বলি, আপনি আপনার জায়গা থেকে খানিকটা সরে নিরপেক্ষতার উন্মুক্ত মহাসড়কে এসে একটু দাঁড়ান। এরপর সব ধর্ম নয় শুধু ইসলামটাকে একটু নেড়ে চেড়ে দেখুন। গভীর করে উপলব্ধি করুন ভিতরে কি আছে। কোনো কিছুর ভিতরে প্রবেশ না করলে সেটাকে ঠুনকোই মনে হয়। অল্প বিদ্যা যে কোন জিনিসের জন্য ক্ষতিকর। আপনি আপনার  ওই ভরা যৌবনে দুতিনটে নাস্তিক্য বই না পড়লে এতটা আলসার আপনার হত না। ওপার বাংলার ওই অখাদ্য সাহিত্যই আপনাকে খেয়েছে। নাস্তিক্যবাদের চিন্তা চেতনা কিংবা গ্রন্থপুঞ্জি সত্যিকারার্থে কোনো শিক্ষিত মানুষকে টলাতে পারে না। অগভীর অশিক্ষিত কাউকে যে কোন বাতাসে টলিয়ে দিতে পারে। আপনি তো নিছক গবেষণা করে বলেন নি আল্লাহ নেই। ধর্ম টর্ম সব সেকেলে। ওরা বলেছে তাই আপনি কোকিলের মত বলতে শিখেছেন। ওদের পেছনে ঘুর ঘুর করেছেন; ওরা আপনার মুখে নাস্তিক্যবাদের টোপ গিলিয়ে দিয়েছে। ওদের জয় হয়েছে। আপনার লয় হয়েছে। যদিও দুচোখের তারায় আপনি শুধু জয় আর জয় দেখছেন।

আপনাকে আমরা আপনি করেই বলতে প্রীতিবোধ করছি। মহামহিমের সৃষ্টি হিসেবে আপনার আলাদা একটা শ্রদ্ধা আছে। আপনার সাহিত্য মেধারও আমার আমাদের কাছে অন্য রকম একটা মূল্যায়ন আছে। তাছাড়া তুই তোকারি করে বলতে আমাদের খুব বাঁধে। আর আপনার গায়ে হুঁল ফুটাতে হলে আপনার মত অরুচিমনা একজন হতে হয়। ওমন আমরা কেউ হতে পারি নি। জানি না- এটা আমাদের অক্ষমতা কি না?….

…আসলে এসব অবিশ্বাসে আপনাদের খুব সুবিধা। যাচ্ছে তাই করা যায়। কোনো বাধা-ব্যকরণ নেই। জন্ম দিনের পোষাকে বেরুলেও বলার কেউ নেই। যে বলবে তার পিঠে একটা ‘সেকেলে’ শব্দ সেঁটে দিবেন। ব্যস ল্যাঠা চুকে যাবে। আপনার কি? আপনার কিছুই হবে না। বড় বাবুরা দুহাত বাড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে। শুধু তাদের কোলে আপনার ঝাঁপিয়ে পড়তে যা বিলম্ব।

একটি কুকুর যা দেখে তাই বুঝে। তাই বিশ্বাস করে। যা দেখে না তা বুঝে না। বিশ্বাসও করে না। মানুষ তো কুকুর হতে পারে না !

তবে ধর্মে কালি ছিটিয়ে আপনি আমাদের ঋদ্ধ করেছেন। আপনার এ ঋণ আমরা শোধ করতে পারি নি। দোষ আমার। দোষ আমাদের। ধর্ম নিয়ে হাঁটা চলা করা মানুষগুলোর। আপনার মত কলম আমাদের হয় নি। আপনার মত শব্দ গাঁথুনি আমরা তৈরি করতে পারি নি। তাই আপনার শোধ হয়েছে। আপনার শব্দের শোধ হয় নি। আপনি বলেছেন ইসলামটা কি এতই ঠুনকো…। বেশ বলেছেন। তবে কথা হল, মজবুত একটা দেয়ালের গায়ে একটা পুঁচকে মাছি যতই আঘাত করুক; ওতে দেয়ালের কিছুই হয় না। তবে ও বদমাশ মাছিটার স্পর্ধা ও অজ্ঞতার জবাবটুকু দেবার অস্ত্র আমাদের নেই। আমাদের কলম আছে। কলমে ধার নেই। ও কলম দিয়েই আমরা আঘাত করি। ওতে কিছু হয় না। কোথায় আঘাত করতে হবে সে জায়গাটা আমরা চিনি না। কখনওবা চিনি। আঘাত করি। কিন্তু ক্ষত হয় না। শানিত নয় বলে। উল্টো কখনো আমাদের গায়ে এসে বুমেরাং হয়।

আপনি বাহিরে আছেন। ভাল আছেন। ও বাহিরটাই আপনার। এ নীল আকাশ, ফুরফুরে বাতাস, আম তলা, জাম তলা, ঝলমলে রোদ্দুর এ সব আপনার নয়। এ মাটি এত অনুর্বর নয় যে পুতিগন্ধময় অবিশ্বাসের পরগাছা জন্ম দেবে। এ মাটি পবিত্র। ফুটফুটে নিষ্পাপ শিশু জন্ম দেয়। লকলকিয়ে বেড়ে উঠলে কখনো ওতে শকুনের চোখ পড়ে। ওরা ওটাকে ওদের করে নেয়। ফলে এ দেশের রস কস ওর পেটে সয় না। দু একটু গলধঃকরণ করলেও উগলে ফেলে দেয়। আপনি ওদের অখাদ্য খেয়ে বেড়ে উঠেছেন। আপনি এখন ওখানের। এখানের নয়। ওখানেই থাকুন। ভাল থাকুন।

আসলে যারা প্রকৃত জ্ঞানী ও বিজ্ঞানী তারা জানেন যে তারা কত কম জানেন। তাই তারা সৃষ্টি জগতের বিশালতার সামনে নিজের ক্ষুদ্রতা অনুভব করে স্রষ্টার সামনে বিনীত হন। যিনি যত বড় বিজ্ঞানী স্রষ্টার অস্তিত্বে তিনি তত বড় বিশ্বাসী। স্রষ্টার প্রতি তিনি তত বেশি কৃতজ্ঞ ও অনুগত। বিজ্ঞান কি? বিজ্ঞান আর কিছু নয়; শুধু বিশাল সৃষ্টি জগতের অসীম রহস্যে হারিয়ে যাওয়া এবং স্রষ্টাকে খুঁজে পাওয়া। প্রকৃত বিজ্ঞান এবং সত্য ধর্মের মাঝে কখনো কোন বিবেধ ছিল না। এখনো নেই। ধর্ম ছাড়া বিজ্ঞান সে তো পঙ্গু। আর বিজ্ঞান ছাড়া ধর্ম সে তো অন্ধ। এগুলো আমার আপনার কথা নয়। আইনষ্টাইন, নিউটনের মত বড় বড় বিজ্ঞানীদের কথা। আপু! একটু ভেবে দেখবেন কি?

কোথা থেকে কোথায় চলে গেলাম। যাক। সবার পেটে ক্ষুধা। ঠোটগুলো শুকিয়ে চড়চড়ে হয়ে আছে। কেউ মুখ খুলছে না। নিজের পেটের ক্ষুধা কি করে বলি! একটু একটু ব্রীড়া করে। এক সময় মুখ ফসকে বেরিয়ে আসে ক্ষুধা পরটা ভাজি হোটেল শব্দগুলো। সাথে নীরব মুখগুলোও সরব হয়। মাঝে বসে থাকা বন্ধুরা গ্লাস ঘেঁষা বন্ধুদের বলছে হোটেল দেখো। আমাদের পাশ ঘেঁষাদের দু দুটো চোখ রাস্তার ধারে পড়ে থাকে। কোথাও জমাট বদ্ধ কোন দোকান পাট দেখা গেলে চোখের পলকেই তা হারিয়ে যায়। কোনটা হোটেল কোনটা দোকান ঠাহর করতে পারি না। আমি, বিশারতুল্লাহ, সামনে বসে থাকা তলহা, মাহমুদ দু’ দুটি চোখকে টর্চ লাইটের মত রাস্তার পাশে ধরে রাখি। মামাকে বলে দেয়া হয়েছে মধ্য সারির একটি হোটেলের সামনে দাঁড়াতে। মামা পুরোটা না হলেও এক আধটু এদিক ওদিক চোখ রাখছেন। গোটা কয়েক বাজার স্ট্যান্ড চলে গেল। মামা থামলেন না। কি বুঝে কে জানে? বাজার স্ট্যান্ড এসবে তো ছোট্ট গোছের হলেও এক দুটো হোটেল থাকবে। দু’ তিনটে খাবার ঘর না হলে কি আর বাজার হল! স্ট্যান্ড হল! আমরা ঘুড়ি কাটার মত করে কথা কাটা কাটি করছি। কেউ বলছে ওতে হোটেল আছে। কেউ আবার কথাটাকে ফুৎকার দিয়ে উড়িয়ে দিয়ে বলছে নেই। যেন আসলেই নেই। চোখে দেখা নেই। চট করে কি আর হোটেল বের করা যায় অতগুলো ঘরের মধ্য থেকে ? গাড়ি তো চলছে আশি একশতে। বাহিরে কোন কিছুতে চোখ রাখলে মনে হয় কে যেন চোখ থেকে ছোঁ মেরে নিয়ে গেল জিনিসটা।

ময়নামতির নিবিড় ছায়ায়

পেছনে আমরা অনেক পথ পেরিয়ে এসেছি। নারায়নগঞ্জ সীমানার সিদ্ধিরগঞ্জ, লাঙ্গলবন্দ, বন্দর, এরপর মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া সীমানায় ঢুকে সামান্য পথ মাড়িয়ে কুমিল্লায় ঢুকে পড়েছি। দাউদকান্দি ছাপিয়ে এখন আমরা চান্দিনা সীমানয়। খানিকটা এগিয়ে চোখে পড়ে ময়নামতি। সত্যি ময়না পাখির মত সুন্দর মুক্তোর মত মনকাড়া। দু’ ধারে উঁচু নিচু সারি সারি পাহাড়ী টিলা। তার উপরে ঘন সবুজের বাতায়ন। দু’ ধার থেকে রকমারি গাছ গাছালি নিজেদের ডগা ঝুঁকিয়ে বয়ে যাওয়া পথের জন্য আবরণ তৈরি করে দিয়েছে। উপরে তাকালে চোখের তারায় ভেসে উঠবে এক চিলতে নীল আকাশ। রাস্তা ঘেষে মাঝে মাঝে ছোট বড় সেনা ছাউনি। ছাপ ছাপ কুর্দি পরে মূর্তির মত দাঁড়িয়ে আছে এক দুজন আর্মি সেনা। হাতে লাল বাটের অস্ত্র ঝুলছে। কোথাও বিশেষ ছাপার গেঞ্জি ট্রাউজার পরে কোদাল হাতে নেমে পড়েছে মাটি খননে। চোখের পলকে দেখে নিই এক চিলতে ময়নামতি। পায়ে হেঁটে ঘুরে বেড়ালে হয়তো আরো সুন্দরের দেখা মিলত। মৃত্তিকা বিজ্ঞানীরা বলেন পৃথিবীর সবচে পুরনো মাটি দিয়ে গড়া এ ময়নামতি। কুমিল্লা শহর থেকে ৮ কি.মি. পশ্চিমে দীর্ঘ এগার মাইল জুড়ে এর অবস্থান। বাংলাদেশে যে কটা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম এ ময়নামতি।

এক পৃথিবীর ক্ষুধা

আমরা হোটেল খুঁজছি। পরোটা খুঁজছি। স্বাদে চপচপ করা ভাজি খুঁজছি। টেবিল চেয়ার প্লেট গ্লাস খাবারের যত আয়োজন সবি খুঁজছি। আঙ্গুলের ডগায় ক্ষুধা লেগেছে। পরোটা ছেড়ার ক্ষুধা। পরোটা ছেড়ার জন্য সবার দু দুটো হাত নিশপিশ করছে।

আমরা চান্দিনার গণ্ডি পেরিয়ে কুমিল্লা সদরে ঢুকে পড়েছি। মামা সামনে তাকিয়ে আছেন। তাকিয়েই আছেন। জীবনের সবটুকু সুখ যেন সামনের ওই সড়কটাতেই পড়ে আছে। মামা মানুষটাই সমুখে তাকানোর। তাই গাড়িতে চড়লেই লাট সাহেবের মত সামনে গিয়ে বসেন। জুলজুল করে সামনের দিকে তাকিয়ে থাকেন।

মামাটা মূলত আমাদের মামা নয়। দূরেরও নয়। কাছেরও নয়। দূরের হলেও ভাগ্নের মামা। তাই মামা করে বলছি। রক্তীয়তার কোন গন্ধে নয় শুধু নামে তাকে মামা বলছি। বলব। দু’ তিন দিনের জন্য মামা হালিমের মত তার নাম মামা।

এখন মামা বলাটা একটা নতুন ফ্যাশন। একজন আরেকজনকে মামা বলে ডাকে। এটা অবশ্য অচেনাদের মাঝে হয়। অচেনা কাউকে মামা করে বলাটা আমি প্রথম শুনি ২০০৭ এ। একদিন আমার এক খালাতু ভাইয়ের সাথে এক রেস্তোঁরায় বসে নাস্তা করছি। আচমকা কি এক প্রয়োজনে ভাইটি রেস্তোঁরা বয়কে মামা করে ডেকে উঠে। আমি তো অবাক। জিজ্ঞেস করলাম, কিরে এ তোর মামা হল কি করে। তোর মামা হলে আমারও তো মামা হবে। কই আমি তো চিনছি না। জীবনে কোনো দিন দেখেছি বলে মনে পড়ে না। খালাতু ভাইটা এক গাল হেসে বলে এটা ইদানিং কালের স্টাইল। পরে পথে ঘাটে অনেক দেখেছি এ ওকে মামা করে বলছে। আমাদের মামাটা সেধরনের কিছুও হতে পারে।

মাতৃভাণ্ডারে শুভ্র মিছিল

গাড়ি চলছে আর চলছে। আচমকা আমাদের নিয়ে দাঁড়িয়ে যায় মামা। কাচ ভেদ করে চেয়ে দেখি রাস্তার পাশে ইয়া এক বড় হোটেল। হিসেবের খাতায় কালি পড়ে যায়। পথের এখনো অনেক বাকি। গাড়িটাকে খাওয়াতে হবে। আমাদের ইঞ্জিনগুলোতেও তেল গ্যাস দিতে হবে। মিত হিসেবী অন্তত এক দিনের জন্য হলেও হতে হবে। কিন্তু এখন করার কিছুই নেই। পাঁচ তারা হলেও নামতে হবে। সাত পাঁচ ভাবার সময় আমাদের নেই। পেটে আগুন। ওটাকে নেভাতে হবে। গাড়ির দরজা খুলে তরতর করে আমরা বেরিয়ে আসি। হোটেলটার আশপাশ জুড়ে খাখা শূন্যতা। ঘর নেই। বাড়ি নেই। গাছ নেই। গাছের ছায়া নেই। জন মানবহীন এক মরু প্রান্তরে একটা বিল্ডিং দাঁড়িয়ে আছে। বিল্ডিংটা বড় একা। বড় অসহায়। তাকে সঙ্গ দেবার কেউ নেই। কথা বলার কেউ নেই। তার গা জুড়ে বিরাজ করছে একাকিত্বের ধুধু শূন্যতা।

আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক দুজন সবিস্ময়ে আমাদের দেখছে। আর ভাবছে এতগুলো সাদা মানুষ কোথা হতে এল।

সে ভোর থেকে হাঁটি না। বসে থেকে থেকে পা দুটো নিথর হয়ে আছে আমার-সবার। আস্তে আস্তে পায়ের পাতা ফেলে ছোট্ট একটা মিছিলের মত গড় গড় করে হোটেলটার ভেতরে ঢুকে পড়ি। ভিতরটা বেশ ছিমছাম। ফ্লোর জুড়ে আভিজাত্যের ছোঁয়া। সারি সারি টেবিল চেয়ারের সমারোহ। এক রঙ্গা ড্রেস পরিহিত হোটেল বয়গুলোর ব্যস্ত হাঁটাহাঁটি চোখে পড়ার মত। মরু প্রান্তের এ হোটেলটাতেও রসনা বিলাসী মানুষের অভাব নেই। চার দিকে চেয়ার পেতে বসে মানুষগুলো খাচ্ছে হাসছে কথা বলছে। আমরা এক দুজন করে বেসিং থেকে হাত ধুয়ে নিই। মাঝে কটা চেয়ার ফাঁকা পড়ে আছে। কিন্তু ওতে সবাই একযোগে বসে খেতে পারব না। এটা ভেবে আমরা কজন ফাঁকা চেয়ারগুলোতে বসেও উঠে যাই। দক্ষিণ দিকের দেয়াল ঘেষা দু’ তিনটে টেবিল পুরো খালি। একজন বয় নখ উঁচিয়ে জায়গাটা দেখিয়ে দেয়। আমরা হাঁটি হাঁটি পাপা করে ওদিকটায় এগিয়ে যাই। পুরো হোটেলের চোখগুলো আমাদের উপর আছড়ে পড়ছে। যেন আমরা সবগুলো আঁখির মধ্যমণি।

হোটেল বয়গুলো খুশি, ম্যানেজার খুশি এতগুলো মুখ এক সাথে পেয়ে। আমরা ৩.৫টা টেবিলে এদিক ওদিক থেকে দু’ চারটে চেয়ার টেনে এনে চার দিক করে বসে যাই।

পশ্চিম দিককার টেবিলটায় আতাউল্লাহ হাবিব বিশারতুল্লাহ মামুন মাহবুব। মাঝেরটায় আমি মাহমুদ সফিউল্লাহ মামা তলহা। তৃতীয়টায় শুআইব …..। আর ভাগ্নে উধাও। এসব জায়গায় এ মানুষটা উহ্য থাকে। চোখের আড়াল হয়ে যায়। আমরা দু’পা ঝুলিয়ে বসে আছি আর বসে আছি। শূন্য টেবিলগুলোতে আমাদের এক দুটো হাত পড়ে আছে। আর কিছু নেই। আসছে না। হাঁটা হাঁটি করা একরঙ্গা মানুষগুলোকে জিজ্ঞেস করি। অপারগতা জড়ানো এক টুকরো হাসি ঝরিয়ে বলে, হচ্ছে, আসছে। কিন্তু সে হচ্ছে আর হয় না। সে আসছে আর আসে না। আমরা বসে অপেক্ষা আর প্রতীক্ষা খেয়ে খেয়ে সময় পার করি। করার কিছু নেই। যা করতে ইচ্ছে করে না তাই করতে হচ্ছে। যা খেতে ইচ্ছে করে না তাই খেতে হচ্ছে। পাশে বসে থাকা মামাটা মাঝে মধ্যে স্বরচিত গলা ফাটানো এক দুটো কোরাস ছাড়েন। কিন্তু তা হাওয়ায় মিলিয়ে যায় নিমিষেই। প্রতিধ্বনিত আর হয় না। আমরা উঁচু নিচু আওয়াজে অনেক বিরক্তি ঝাড়ি। ভেতরের ক্ষুধা জড়ানো কষ্ট ঝাড়ি। শুধুই ঝাড়ি। ওতে কিছু হয় না। অপেক্ষার জানালা বন্ধ করে দিই। ওতে লাভ নেই বলে। যখন আসার আসবে বলে তৃপ্তির ঢেকুর তুলি। শুকনো সংলাপে মেতে উঠতে চেষ্টা করি।

সংলাপের এক ফাঁকে দেখি টেবিলের প্রশস্ত দেহে এক দুটো পিরিচ এসে বসেছে। ধীরে ধীরে শূন্য টেবিলগুলো যৌবন ফিরে পাচ্ছে। কি দরকার ছিল এত দেরি করে আসার। না এলেই হত। সংলাপ আর প্রতীক্ষা খেয়ে খেয়ে শূন্য উদরে বিদেয় নিতাম!! হয়তবা ওরা ভয় পেয়েছিল। জেনেছিল ওদের পেটে ক্ষুধার আগুন। আমাদের এতটুকু সময় দেবে না। নিমিষেই ছিড়ে ফেড়ে সাবাড় করে ফেলবে। ভয় করে লাভ কি হল।

এক সময় শূন্য টেবিলটা দ্রুত ভরে যায়। দু’ চোখে ঘড়ির কাটা ছিল না। কর গুণে দেখি নি ক সেকেন্ড ক মিনিট খামোকা নষ্ট হল। মনে হল ইয়া বড় একটা ঘন্টা আমাদের নষ্টের চেয়ে ও বড় কিছু হল। হোটেলটার মত বড় একটা মূল্যবান জিনিস আমাদের খোয়া গেল। এ সময়টুকুতে সাগর পাড়ের নারিকেল তলায় গিয়ে দাঁড়ালে লাভ হত। বিজন ভূমিতে দাঁড়িয়ে থাকা একটা বালু সিমেন্টের ছাউনিতে কটা পরটা পেটে দেবার জন্য অযথা রঙ্গিন সময়গুলো নষ্ট হল।

তেরচা করে কাটা পরটা আর হলুদ রঙ্গের ভাজি আমাদের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। যেন ওরাই আমাদের খাবে। অনেক বিলম্ব হয়েছে। এখন বিলম্ব করা কোন রকমেই ঠিক হবে না। গুছিয়ে রাখা হাতগুলো বাড়িয়ে নখগুলোকে সচকিত করে আহার পর্ব শুরু করে দেই।

টেবিলে রাখা ছোট ছোট থালা বাটিগুলো বিরান হতে তেমন সময়ের প্রয়োজন হল না। খানিক পর আবার পরটা এল। ভাজি নেই। ভাজির অপেক্ষায় পরটা শেষ। পরটার অপেক্ষায় ভাজি শেষ। নুন আনতে পান্তা ফুরোয় আর কাকে বলে ! আমার চোখ মুখ বরাবর বসা সফিউল্লাহ। প্লেট শূন্য মুহূর্তগুলোতে চোখের আড়ালে দুষ্টুমির পর্বগুলো সেরে নিচ্ছে। আমি আর মাহমুদ এক প্লেটে। প্লেট শূন্য হলে কথার ফাঁক ফোকড়ে সফিউল্লাহ এক দুটো আস্ত মরিচ ঠেলে দিচ্ছে। যেন অবসর বসে না থেকে চোখ মুখ রাঙ্গাতে পারঙ্গম পাজি এ মরিচগুলো খেয়ে নিই। অল্প সময়ের ভিতরে আমাদের রসনা বিলাস পর্ব শেষ হলো। সময় গেলেও আগুন নিভেছে।

মামা হল আমাদের মধ্যমণি। উনি ঠিক তো আমাদের যাত্রা ঠিক। তাই উনার আহার মেনুটা আমাদের সবার থেকে আলাদা। উনার রুচিই উনার আহার মেনু। খাবার শেষে মামা এক কাপ কফির অর্ডার করল। বয়টা কানরোগা কি না-এক কাপ দুধ চা নিয়ে এল। মামা ধমকে আবার পাঠাল। টেবিলে রাখা চা কাপটি মাহমুদের হাতে উঠে আসে। আমাকেও সহপিয়াসী করে নেয় কাপটি শূন্য করতে। আমরা চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াই। ছোট্ট একটা মিছিলের মত তর তর করে বেরিয়ে আসি। অর্থসচিব বিল মেটাতে চেম্বারে গেল। বাহিরে বেরিয়ে আমরা এক দুজন করে গাড়িতে চড়ে বসি। আমি হোটেলটার সাইন বোর্ডে চোখ তুলে তাকালাম। ‘মাতৃ ভাণ্ডার হোটেল বড় লেখা বিশ্ব রোড কুমিল্লা’। বড় লেখা হলেও লেখাটা তেমন বড় নয়। সচিব সাহেব বিল শোধ করে এসেছেন। বিলের মেনু বেশ চওড়া। সীমাহীন মুদ্রাস্ফিতি। যেন পাতা চেয়ার টেবিল মাথার উপরে ভন ভন করে ঘুরতে থাকা পাখা হোটেলের গায়ে চড়ানো রঙ্গ ভেতরের সিমেন্ট বালু ইট সবকিছুর বিল আমরা শোধ করে এলাম। মাতৃভাণ্ডার হলেও মায়ের মমতা আমরা পাই নি। আচরণটা বিমাতা সুলভ হয়েছে বলা যেতে পারে। তবে এটা তেমন কিছু নয়। এতে আমরা অভ্যস্ত। সুতরাং ওতে কিছু এসে যায় না। আর আমরা তো জানিই ‘নামের বড়াই কর না কো নাম দিয়ে কি হয় নামের মাঝে পাবে না কো সবার পরিচয়।’

সবাই আমরা আপন আপন আসনে গিয়ে বসে পড়ি। তখন সূর্য বেশ উপরে উঠে গেছে। ঘড়ির কাটায় ৯.৪৫ মিনিট। মামা আসলেন। এবং তার চিরচেনা সমুখের জায়গাটিতে গিয়ে বসলেন। আমাদের খোঁজ নিয়ে গাড়ি ছুটালেন। আঁকা বাঁকা পিচঢালা পথ মাড়িয়ে আমরা ছুটে চলছি। রিম ঝিম পিপ পিপ প্যা পু শব্দ করে আমরা দৌড়ে চলছি।

চলন্ত সচিবালয়

এ সুযোগে আমি তথ্য কুড়াতে মনোযোগী হই। আমার কোল জুড়ে চাঁদে যাওয়া মানুষের সুয়েটার। (আসলেই চাঁদে কেউ গেছে কি যায় নি তা নিয়েও নাকি বিতর্ক রযেছে। ম্যাড ইন মিডিয়া বলেও নাকি একটা ব্যাপার আছে। জানি না এ বিতর্কের নিরসন কি?) বেলা বেড়ে গরম পড়েছে। তাই ওটাকে গায় রাখা যায় নি। সুয়েটারটার উপরে কাল ব্যাগ। রাখার মত যুৎসই জায়গা নেই। পেছনের খালি সিটগুলোতে এক স্তুপ ব্যাগ-ঝুড়ি রাখা হয়েছে। ওটা নিরাপদ জায়গা নয়। গাড়ির ঝাকুনিতে নিচে নেমে যায়। ধুলো বালুতে গড়াগড়ি খায়। উঠালেও কিছু সময় থেকে আবার নিচে চলে যায়। যেন ওটাই ওদের আসল ঠিকানা।

পকেট থেকে কলমটা বের করে হাতে তুলে নিই। কিসের উপরে লিখব? ব্যাগের চেইন খুলে মোটা ডায়রিটা বের করব? গাড়ির গতি বেগ বেশ দ্রুত। ঝেঁকে ঝেঁকে ঝাল মুড়ি হচ্ছি। এখন ক লিখলে খ হয়। ডাইরিতে লিখতে হলে কিছুটা হলেও ভাল লিখতে হয়। এখন কাক বকের পা এঁকে ডাইরি নষ্ট করার অর্থ হয় না। রাফ লেখার জন্য ভাল কাগজের প্রয়োজন নেই। ছেড়া ফাটা কিছু একটা হলেই হল। সুহৃদ বিশারতুল্লাহ ‘সমকাল’ কিনেছিল। ওর ভেতরে সোমবারের ট্যাবলয়েড ‘প্যাঁচ আল’ ছিল। ওটা আমার হাতে। প্রচ্ছদ পাতাটা লালচে হলুদ। মাঝে একটা চিচি করা মুরগির ছা গম্ভীর করে দাঁড়িয়ে আছে। কোমরে গুলির বেল্ট। কাঁধে ভয়ংকর এল এম জি। পুঁচকে মুরগির বক্তব্য, ‘ভাই ছাত্রদলে যোগদান করবার চাই’। ঢাকা ভার্সিটিতে ছাত্রদলের ভিতরগত কোন্দলে রক্ত ঝরেছে। হাতে হাতে অস্ত্র শোভা পেয়েছে। এটা ‘দল’ এর একক বৈশিষ্ট্য নয়। বরং বলা যায় লীগ এতে এক ধাপ এগিয়ে। সমকাল তো। এজন্য সে তার মত করেই এঁকেছে, লিখেছে। আমি দুঃসাহসী মুরগীর বাচ্চাটার উপরেই কলম চালাতে শুরু করি। কিন্তু কলমের নাচানচিতে লিখতে পারছি না। সে কি যে বিরক্তি! This is very disgasting and cose of my pein. তবু লিখছি। লিখতে হবে তাই।

পাশে সুহৃদ মাহবুব। হাতে প্যাড কলম শোভা পাচ্ছে। Our accountant। হিসেব চোতা সব তার হাতে আসছে। কোথায় কত কড়ি ব্যয় হল সব উঠে যাচ্ছে কম্পিউটারের মত।

সামনে আতাউল্লাহ বসা। মাঝে মধ্যে মুঠো ফোনে বুতাম টিপছে। পথের আগাছা ছেটে পরিষ্কার করছে। কোথায় রাত পোহাবে। কোন পথে আমাদের সময় বাঁচবে। দেখার মত কোথায় কি আছে। সব মোবাইলের বাটনে ঠিক হচ্ছে। আগে শুনতাম দূর আকাশে বিমানে গোলযোগ হলে ল্যাবরেটরিতে বসে কম্পিউটারের বোতাম চেপে বিজ্ঞানীরা সব ঠিক ঠাক করে দেয়। নাটের প্যাঁচ শিথিল হলে তাও বাটন চেপে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে লাগিয়ে দেয়। ব্যাপারটা আমার কাছে খুব তাজ্জব মনে হত। এটা কি করে হয়! এখন দেখি না সবি সম্ভব। কোথায় চিটাগাং কোথায় কি, কোথায় কি হবে না হবে দেড় আঙ্গুলে ছোট্ট একটা জিনিস যোগে সব ঠিক হচ্ছে।

চিটাগাঙ্গের মাটি আতাউল্লাহর ভাল চেনা। বেশ ক বছর ধরে নেভিতে নামাজ পড়ায়। নেভি-চিটাগাঙ্গের অনেক গল্প শুনিয়েছে আমাদের। পাহাড় বনে আর সাগর তীরে হাঁটতে হলে আতাউল্লাহকে গাইড বানাতেই হয়। নিজে না হলেও আশপাশ হাতড়িয়ে পথ তৈরি করে দিতে পারবে। চট্টগ্রামের মাটি সম্বন্ধে পাশাপাশি বসে থাকা এগার জনের ভিতরে সবচেয়ে কম জানা যে মানুষটা সে হল আমি। চট্টগ্রাম শব্দটা শুধু কানেই বেজেছে। দুচোখ মেলে আর দেখা হয় নি।

আমাদের একেক জন একেক কাজে ব্যস্ত। যেন একটা চলন্ত সচিবালয়। আমরা সবাই একা। একমাত্র একজন শুধু দুজন। মাঝে মধ্যে মুঠোফোনে দুজন দুজনায় হারিয়ে যাচ্ছে। সামনে মামা বসে আছে। এক মনে গাড়ি চালাচ্ছে। কোনো গাড়ি সাইড না দিলে কিংবা এদিক ওদিক করলে গায়ের সবটুকু শক্তি ব্যয় করে পিলে চমকানো একটা শব্দ করে কষে একটা গাল বসিয়ে দেয়। এটা চালকদের ঘরোয়া সংস্কৃতি। আমরা মামার আচমকা শব্দে সচকিত হয়ে উঠি। গা ঝাড়া দিয়ে প্রকৃতিস্থ হয়ে বসি। এবং এক গাল হেসে নিই। সুহৃদ মাহমুদ হাতে রাখা মোবাইলটা অন করে ভেতরের সংগীতগুলো ছেড়ে দেয়। সুরে সুরে আমাদের গাড়ি ছুটে চলে। হৃদয়কাড়া সুরের দ্যোতনায় হৃদয় মন ছুঁয়ে যায়। দূর যাত্রার আনন্দ আঁকা বাঁকা মেঠো পথ আর দিগন্তজোড়া সবুজ দেখার আনন্দ পীচ ঢালা পথ মাড়িয়ে শো শো করা গাড়িতে চলার আনন্দ চিরচেনা অনেকগুলো মুখ পাশাপাশি বসে থাকার আনন্দ এবং মন মাতানো রুচি গানের আনন্দ অনেকগুলো সুখ আনন্দ আমার আমাদের হাতের মুঠোয়। সবগুলো আনন্দ মিলে নীল রঙ্গা একটি পাখি হয়ে দূর আকাশে ডানা মেলেছে। আর তার ডানায় চড়ে আমরা হাসি আনন্দে উড়ে চলছি দূর অজানায়। সবুজের বুক চিরে আমরা শুধু চলছি আর চলছি।

চলবে, ইনশাআল্লাহ

পোস্টটি লাইক ও শেয়ার করুন।

একটি মন্তব্য লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *